আমার আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই : আবদুল হামিদ
দীর্ঘ ১০ বছর ৪১ দিন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে প্রথমবারের মতো নিজ জন্মস্থানে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনের কামালপুরে এসেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সোমবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নৌকাযোগে মিঠামইনের কামালপুরে পৌঁছান তিনি।
বাড়ির ঘাটে নেমে অপেক্ষায় থাকা সবার উদ্দেশ্যে আবদুল হামিদ বলেন, আপনাদের আবদুল হামিদ আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছে। আপনারা আমাকে যা দিয়েছেন আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আজকেও আপনারা শত শত নৌকা নিয়ে আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এখন আমি নিয়মিত বাড়িতে আসবো, আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে, মতবিনিময় হবে। আমার আর কোনো কিছুই চাওয়া-পাওয়া নেই। এখন আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
কামালপুরে পৌঁছার পর বাড়ির সামনে গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি।
এর আগে দুপুর ২টার দিকে কিশোরগঞ্জের খরমপট্টি বাসভবন থেকে সড়কপথে রওনা দেন আবদুল হামিদ। বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে স্বাগত জানাতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ফুল নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
এছাড়াও হাওরের প্রবেশপথ করিমগঞ্জের বালিখলাঘাট এলাকায় শত শত ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন হাওরবাসী। পরে বালিখলাঘাটে মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আছিয়া আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুমীর কুমার বৈষ্ণব, মিঠামইন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামালসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সদ্য সাবেক রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান। এর কিছুক্ষণ পরেই সেখান থেকে নৌকাযোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন আবদুল হামিদ।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ, কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুন্নাহার নেলী, আবদুল হামিদের নাতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হামিদ জ্বীম ও রিফাহ তাসনীম হামিদ।
মিঠামইন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামাল বলেন, আমাদের মহামান্য দীর্ঘদিন অত্যন্ত সফলভাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে গত ১৮ জুন কিশোরগঞ্জে এসেছেন। সেখানে কিছু দিন থেকে আজ গ্রামে এসেছেন। আমরা আমাদের মহামান্যকে কাছে পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত।
তিনি বলেন, মহামান্য যেদিন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন সেদিন আমরা যেমন আনন্দিত হয়েছিলাম, দীর্ঘদিন পরে আবারও তাকে কাছে পেয়ে আমরা তেমনিভাবে আনন্দিত হয়েছি।
আবদুল হামিদের ছেলে ও কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, আমার আব্বা কিশোরগঞ্জের মাঠি ও মানুষের নেতা। তিনি সব মানুষের জন্য কাজ করেছেন। মানুষের যে কোনো বিপদ আপদে এগিয়ে এসেছেন। তিনি তৃণমূলের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করেছেন। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পাওয়ার আগে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছেন। তৃণমূলের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে উনার আত্মার সম্পর্ক। কিন্তু রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এবং নিরাপত্তা বেষ্টনীর কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ওইভাবে সবার সঙ্গে আগের মতো মিশতে পারেননি। বর্তমানে তিনি সফলভাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে আবারও আমাদের কাছে ফিরে এসেছেন। সবার ভালোবাসায় তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। এখন থেকে আব্বা এলাকার মানুষের কাছে গিয়ে গিয়ে খোঁজখবর নেবেন ।
আরএআর