‘রাজা বাদশার’ জন্য মাসে খরচ ২৫ হাজার, ওজন ৩৩ মণ
সাড়ে তিন বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কিনে লালন-পালন শুরু করে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের লাউতা গ্রামের শাহজাহান-ফুলজান দম্পতি। ছোটবেলা থেকেই সন্তানের মতো আদর-যত্নে বড় করেছেন গরুটিকে। শখ করে সাদা-কালো রঙের এই গরুটির নাম রেখেছেন রাজা বাদশা। ফ্রিজিয়ান জাতের ৪২ মাস বয়সী ষাঁড়টি নামের মতো দেখতেও বেশ বড় আকারের।
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখেই এই দম্পতি রাজা বাদশাকে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুজনেই ষাঁড়টির পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন। খাবার খাওয়ানো থেকে শুরু করে রাজা বাদশার যত্নের কোনো কমতি রাখেননি তারা। ৩৩ মণ ওজনের রাজা বাদশা ঈদের বাজারে বিক্রি করবেন এই দম্পতি। আর ষাঁড়টির দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা।
ফ্রিজিয়ান জাতের ৪২ মাস বয়সী এই ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য আট ফুট ও পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতা। রাজা বাদশাকে দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই দম্পতির বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। রাজা বাদশাকে দেখতে আসা অনেক দর্শনার্থীই তুলছেন সেলফি। কেউ আবার হাত বুলিয়ে আদর করছেন এই ষাড়টিকে।
শাহজাহানের স্ত্রী ফুলজান বেগম জানান, নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করি রাজা বাদশাকে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাই। খড়, তাজা ঘাস, ভুট্টা, মালটা, আঙ্গুর ফলও খাওয়াই। বছরে ৬০০ বস্তা গমের ভুসি খাওয়াই। রাজা বাদশার যেন গরম না লাগে, সেজন্য গোয়ালঘরে বড় একটি ফ্যানও লাগাইছি। ষাঁড়টিকে দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষ আমার বাড়িতে ভিড় করে।
মালিক শাহজাহান বলেন, প্রথম দিকে রাজা বাদশার পেছনে খরচ কম হতো। কারণ তখন ষাঁড়টি ছোট ছিল। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গরুটির পেছনে খরচের পরিমাণও বাড়তে থাকে। গত এক বছর ধরে প্রতি মাসে রাজা বাদশার পেছনে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আমার খরচ হয়। সে হিসেবে বছরে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো। তবে রাজা বাদশাকে সম্পূর্ণ ভেজালমুক্ত খাবার দিয়ে এতো বড় করেছি। সামনে কোরবানির ঈদে যদি ষাঁড়টিকে ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে না পারি, তাহলে আমাদের অনেক লোকসান হবে। তবে আশা করছি এই দামেই ষাঁড়টিকে বিক্রি করতে পারবো।
হরিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, শাহজাহান-ফুলজান দম্পতি বাড়িতে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাঁড় গরু লালন-পালন করছেন। আমরা নিয়মিত তাদের বাড়িতে যাই এবং ষাঁড়টিকে লালন-পালনের ক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দেই। ঈদের বাজারে পশুর হাটে রাজা বাদশা নামে ষাঁড়টির বাজার দর ভালো পেলে বা তাদের কাঙিক্ষত দামে বিক্রি করতে পারলে খামারি লাভবান হবেন।
সোহেল হোসেন/আরএআর