বাবার মরদেহ আনতে গিয়ে সড়কে প্রাণ গেল ছেলের
হাসপাতাল থেকে বাবার মরদেহ আনতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৫ জুন) দুপুর ১টা ১০ মিনিটে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে বাবা সোহরাব সরদারের মৃত্যুর ৩০ মিনিটের মধ্যে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মারা যান ছেলে সোলায়মান সরদার (২৮)।
দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সোহরাব সরদার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনী নদীর পাড় এলাকার বাসিন্দা। সোহরাব সরদারের চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে নিহত সোলায়মান সরদার বড়। ছোট ছেলে জলিল সরদার কৃষি কাজ করেন। দুই মেয়ে রাবেয়া আক্তার ও নুরুন্নাহারকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবা সোহরাব সরদার দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত থাকায় দুবাই প্রবাসী ছেলে সোলায়মান সরদার বাবাকে দেখতে বাড়ি এসেছিলেন। সোলায়মান সরদারের স্ত্রী শামীমা বেগম ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাবার মৃত্যুর ৩০ মিনিটের মধ্যে ছেলের মৃত্যুতে পরিবারের সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
নিহত সোলায়মান সরদাদের স্বজন ফরহাদ শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোহরাব সরদার অসুস্থ হওয়ার পর তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করলে দুপুর ১টা ১০মিনিটে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় সোলায়মানের স্ত্রী শ্বশুরের কাছে ছিলেন। শ্বশুরের মৃত্যুর সংবাদ সোলায়মানকে তার স্ত্রী শামীমা দিয়েছিল। বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে সোলায়মান গাড়ি না পেয়ে হেঁটে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মজিদ জরিনা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মাঝামাঝি সড়কে এলে পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দিলে সোলায়মান ঘটনাস্থলেই মারা যান। সোহরাব সরদারের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছেন অন্যরা। আমরা সোলায়মানের মরদেহ ময়নাতদন্ত হলে বাড়িতে নিয়ে যাব। তারপর একসঙ্গে জানাজা শেষে বাবা-ছেলেকে দাফন করা হবে। যারা এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচার দাবি করছি।
সোলায়মানের শাশুড়ি জিয়াসমিন বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মেয়েটা ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সোলায়মান আট মাস আগে দেশে এসেছিল। তার আবার ভিসা হয়ে গেছে। কয়েক মাসের মধ্যে সোলায়মানের বিদেশে চলে যাওয়ার কথা। যারা আমার মেয়েটাকে অল্প বয়সে বিধবা করল আমি তাদের বিচার চাই।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার শারমিন আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোহরাব সরদার বার্ধক্যজনিত কারণে হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর আমাদের কাছে তার ছেলে সোলায়মানকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। সোলায়মান সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার কারণে তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় সৌরভ দেবনাথ নামে একজনকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে পালং থানা পুলিশ। সৌরভের বাড়ি নড়িয়ার মসুরা নামক স্থানে। তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
আরএআর