দ্বিতীয় স্ত্রীকে কুপিয়ে ফাঁস নিলেন স্বামী
নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে কুপিয়ে জখমের পর গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন আক্তার হোসেন (৩৮) নামে এক যুবক। পরে পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে সদরের কাওরিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত স্ত্রী মাহমুদাকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আক্তার হোসেন সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের টাওয়াদী দাশপাড়া গ্রামের মলিল মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আক্তার হোসেন দুই বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম সুমি। এক বছর আগে মাহমুদা বেগম নামে আরেক নারীকে তিনি বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই মাহমুদাকে নিয়ে নরসিংদী পৌর শহরের কাউরিয়া পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। সম্প্রতি নিজ বাড়িতে যাওয়া এবং আগের স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সর্ম্পক রাখাসহ পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী মাহমুদা বেগমের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল। এরই ধারাবাকিতায় বুধবার দুপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে আক্তার হোসেন তার স্ত্রীকে ধারালো ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকেন। এতে মাহমুদার কানসহ মুখের একাংশ আলাদা হয়ে যায়। মাহমুদা রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অচেতন হয়ে যান। এমতাবস্তায় স্ত্রী মারা গেছে ভেবে আক্তার ঘরের ফ্যানের সঙ্গে রশি ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন। আশপাশের লোকজন টের পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আক্তারের প্রথম স্ত্রী সুমি বলেন, আমি আমার স্বামীর মা-বাবার সঙ্গে টাউয়াদি দাসপাড়ায় বসবাস করি। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এমনকি মা-বাবার সঙ্গেও যোগাযোগ করত না। আজ দুপুরে শুনতে পাই সে আত্মহত্যা করেছে।
আক্তারের খালা সাজেদা বেগম বলেন, আক্তার তার মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাহমুদা তা রাখতে দিতে চাইতো না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ চলতো। এরই ধারাবাহিকতায় এ ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল এসে শুনতে পেয়েছি পারিবারিক কলোহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রী মাহমুদাকে কুপিয়ে আহত করে আক্তার হোসেন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। স্ত্রী মাহমুদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর কথা শুনেছি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করি।
আরএআর