ছিনতাইকারীকে চিনে ফেলায় অটোচালক মনিকে হত্যা
টাঙ্গাইলের মধুপুরে ১৪ বছর বয়সী চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনার ২৩ দিন পর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪। ছিনকারীদের একজনকে চিনে ফেলায় চালক মনিকে হত্যা করেন আসামিরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রকিবুল ইসলাম (১৯), আব্দুর রহিম (২২), ফারুক হোসেন (৩৭), শফিকুল ইসলাম (৩২) ও ফরমান আলী (৪০)। তাদের সবার বাড়ী জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায়।
মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর আকুয়া বাইপাস এলাকার র্যাব-১৪ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১৪ এর অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মহিবুল ইসলাম খান।
এর আগে সোমবার ভোরে অভিযান চালিয়ে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার বয়রা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১৪ এর অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম খান জানান, গত ২২ এপ্রিল ঈদের দিন বিকেলে আসামি রকিবুল সরিষাবাড়ির পোগোন্দিয়া থেকে অটোচালক মনিকে জামালপুর সদরের দিকপাইত এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভাড়া করেন। রাস্তায় শফিকুলকে অটোরিকশায় উঠিয়ে নেন এবং তারা দুইজন ঘোরাঘুরির জন্য টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির দিকে রওনা করেন। পথে চা পান করার বাহানায় তারা রহিম ও ফারুকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। রকিবুল ও শফিকুল সময়ক্ষেপণ করার জন্য মনিকে মধুপুরের উদ্দেশ্য যেতে বলেন।
একপর্যায়ে মনি ও শফিকুলকে অটো থেকে নামিয়ে অন্য একজনকে নিয়ে আসার জন্য অটোরিকশা নিয়ে একাই চলে যান রকিবুল। এদিকে রকিবুল আসতে দেরি হলে শফিকুলকে চাপ দিতে থাকে চালক মনি। ইতোমধ্যে রহিম ও ফারুক মোটরসাইকেল নিয়ে চলে আসেন।
রহিমকে দেখে চিনতে পারেন মনি। তাই ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে শফিকুল, রহিম ও ফারুক প্রথমে শ্বাসরোধ করে মনিকে হত্যা করেন এবং মুখে আঘাত করে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরসভার কাইতকাই এলাকার গোলাবাড়ী সেতুর পাশে বেগুন ক্ষেতে ফেলে যান। পরবর্তীতে রকিবুল অটোরিকশাটি ফরমান আলীর কাছে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন এবং নিজেরা টাকা ভাগাভাগি করে নেন।
ঈদের পরদিন সকালে স্থানীয়রা বেগুন ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। মনির বড় ভাই রবিন ছবিটি দেখে মধুপুর থানায় গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
নিহত অটোচালক মনির বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন। ঘটনার পরপরই র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ক্লু-লেস এ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন এবং তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত অটোরিকশা ও কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের অধিনায়ক।
উবায়দুল হক/আরএআর