ইউএনওর বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহের অজুহাতে মারধর ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহের অজুহাতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আটকে রেখে ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (৭ মে) ভুক্তভোগী পরিবার ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক বরাবর এর বিচার চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কাঠালিয়া উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ মরিচবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আলতাব হাওলাদারের বাড়িতে গত ২৫ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বাল্যবিবাহ হচ্ছে সেই অজুহাতে ১০/১২ লোক নিয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় গৃহকর্তার বাড়িতে ইদ উপলক্ষ্যে বেড়াতে আসা মেহমানদের মারধর করেন এবং তার দুই ছেলেসহ তিনজনকে ধরে নিয়ে যান।
আলতাব হাওলাদার বলেন, তারা আমার মেহমানদের লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এবং আমার ছেলে হুমায়ুন হাওলাদার, মামুন হাওলাদার ও আত্মীয় দুলাল হাওলাদারকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যায়। মামুন হাওলাদার সৌদি প্রবাসী হওয়ায় আমি তার ভিসা, পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে তাদের সবাইকে ছাড়িয়ে আনতে যাই। মামুন ২৮ এপ্রিল পুনরায় সৌদি আরব যাবে, আর তার বিমানের টিকিটও কেনা ছিল। সেই টিকিট দেখানোর পরেও তাদের ছাড়তে রাজি হননি। পরে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাইমুর রহমান আমাদের কাছে দেড় লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু তখন আমাদের কাছে এত টাকা না থাকায় পরের দিন ২৬ এপ্রিল আমরা ধারদেনা করে ৭০ হাজার টাকা জোগাড় করে তাদের ছাড়িয়ে আনি।
ভুক্তভোগী পরিবারের আরেক সদস্য সেলিনা বেগম বলেন, বিষয়টি এখন জানাজানি হওয়ায় তারা আমাদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করছে। অফিসের লোকজন আমার ছেলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছবি তুলে নিয়ে গেছে। জানি না সেটা দিয়ে কী করবে। এখন বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা এ নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।
এ বিষয়ে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাইমুর রহমান বলেন, তাদের কাছে কোনো ঘুষ চাওয়া হয়নি। আপনারা অফিসে এসে এ সংক্রান্ত সমস্ত প্রমাণাদি দেখতে পারেন। তারা অযথা আমাদের হয়রানি করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, সারা দেশে বাল্যবিবাহ বন্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এই উপজেলায়ও তা কার্যকর করতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। তাদের যদি কোনো অনুষ্ঠানই না থাকবে তাহলে সেখানে এত মেহমান থাকার কথা না। অবশ্যই সেখানে বাল্যবিবাহের আয়োজন করা হয়েছিল। তাই তাদের ব্যাপারে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ আইনগত। আর তাদের কাছে আমার অফিসের কেউ ঘুষ দাবি করেনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমজেইউ