নদীর সঙ্গে পেরে ওঠা জহুরা হেরে গেলেন ডাঙায়

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের মিত্রসেন পট্টির লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া এমভি ঈগল-৩ লঞ্চ থেকে গত বুধবার (৩ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন জহুরা বেগম (৩৮)। নিখোঁজের ১০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (৪ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে জীবিত উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় জহুরা বেগম মৃত্যুবরণ করেন। তার মা নার্গিস বেগম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, জহুরাকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারলাম না। ওর দুই ছেলে ও এক মেয়ে মা-হারা হয়ে গেল। আমি ওদের কী বলে সান্ত্বনা দেব।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন : লঞ্চ থেকে পড়ে নারী নিখোঁজ, ১০ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার
জহুরার স্বজনরা জানান, মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করার পর তাকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়ার সময় তার বাম পা ভেঙে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের পরামর্শে স্বজনরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার বাম পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
জোহরার দেবর মাইদুল ইসলাম মৃধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাবি চলন্ত লঞ্চ থেকে পড়ে বাঁচার জন্য মেঘনা নদীতে ভেসে ছিলেন। তখন বেঁচে ফিরলেও এখন তিনি মারা গেছেন। গত পাঁচ দিন তাকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। চিকিৎসকরা বলেছেন, রাতভর নদীতে থাকার কারণে ট্রমায় ভুগছিলেন তিনি। পায়ের আঘাতটা ছিল গুরুতর। এছাড়া শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিয়েছিল। আর শরীরের তাপমাত্রাও ছিল বেশি।
কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জহুরা জীবন বাঁচাতে সাহসিকতার সঙ্গে মেঘনা নদীতে ভেসে ছিলেন। সকলের সহযোগিতায় তার উন্নত চিকিৎসা চলছিল। সেই জহুরা এভাবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাবেন তা মেনে নেওয়া কষ্টকর। তাকে দাফন করার জন্য গ্রামে আনা হবে। আমরা তার পরিবারের পাশে থাকব।
এমজেইউ