টিপুর নিজেকে ছাত্রলীগের সভাপতি দাবি, এমপি বললেন না!
২৫ বছরের যুবক টিপু সুলতান। তিনি নাটোর-১ আসনের (লালপুর এবং বাগাতিপাড়া) সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারী। তার দাবি তিনি বাগাতিপাড়া উপজেলার ৫নং ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। কিন্তু নিজের চিকিৎসার খরচ জোগাতে অসুস্থ শরীর নিয়ে ঈদের দুই সপ্তাহ আগে থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় রিকশা চালাচ্ছেন। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম বকুল জানালেন টিপু সুলতান কখনও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল না।
টিপু সুলতান নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ৫নং ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়নের স্যালকোনা গ্রামের মো. শাহজাহান আলীর ছেলে।
ঢাকা পোস্টকে টিপু সুলতান জানান, ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম বকুলের নেতৃত্বে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি। সেই চিকিৎসার খরচ জোগাতে সবকিছু বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে সহযোগিতার আশায় দলীয় বড় ভাই, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এমনকি এমপি-মন্ত্রী সবার দ্বারেই ঘুরেছেন। কিন্তু কোনো ধরনের সহযোগিতা না পেয়ে অবশেষে ভাঙা পা নিয়ে ধরেছেন বিকশার প্যাডেল।
তিনি আরও জানান, ২০০৯ সালে তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে ইমরান সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। আর ২০১৪ সালে ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একসময় থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে ভালোবেসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অভাবের তাড়নায় স্ত্রীও চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডিভোর্স দিয়েছেন তাকে। তাদের ঘরে একটি আড়াই বছরের মেয়ে সন্তান রয়েছে।
তবে ৫নং ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৭ বছর আগে আমাদের কমিটি হয়েছে। সেই কমিটিতে আমাকে সভাপতি করা হয়েছে। নতুন করে আর কোনো কমিটি হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ছেলেটাকে (টিপু সুলতান) আমি চিনতাম, আমাদের ইউনিয়নেই বাড়ি। সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ও জহুরুল চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকত। কিন্তু কিছুদিন যাবত নেশায় জড়িয়ে পড়েছে। সে বাবা-মাকে প্রতিদিন মারধর করত। পরে গ্রাম্য সালিশে তাকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এখন ঢাকায় গিয়ে নেশার টাকা জোগাড় করতে হয়ত কারও ফাঁদে পড়ে এই কথাগুলো বলছে। সে ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতেই পদে নেই। তবে আগে কখনও ছাত্রলীগের সদস্য ছিল কি না এটা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম বকুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, টিপু সুলতান কখনও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন না। বর্তমানে ছাত্রলীগের যে কমিটি আছে সেই কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ। তাহলে সে (টিপু সুলতান) কীভাবে সভাপতি হবে। আর সে আমাদের সঙ্গে কখনও রাজনীতি করেনি।
এমজেইউ