পদ্মায় মিলছে না ইলিশ, খালি হাতে ফিরছেন জেলেরা

দীর্ঘ দিন নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ধারদেনা করে সংসার চালিয়েছেন অধিকাংশ জেলে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর নদীতে জাল ফেলা হলেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ মিলেছে না। এ অবস্থায় মহাজন ও এনজিওর ঋণের চাপে বিপাকে পড়েছেন জেলেরা।
নড়িয়ার জেলে জাহাঙ্গীর বেপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘পেটই চলছে না আমাদের, মহাজনের কিস্তি দেব কীভাবে?
রোববার (০৭ মে) জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর, শফি কাজীর মোড়, জাজিরার সিডারচরসহ মাছ ধরার বিভিন্ন পয়েন্টে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।
মৎস্য বিভাগ বলছে, বর্ষার পানি এলে মাছ পাওয়া যাবে পদ্মায়।
শফি কাজীর মোড়ের জেলে আমির হামজা। ছোটবেলা থেকে নদীতে বাবার সঙ্গে মাছ ধরেছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি কোনো সহযোগিতা পাননি তিনি। ঋণ করেছেন পেটের দায়ে। এখন নদীতে মাছ নেই।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আল্লাহ আমাদের দিকে না তাকালে এবার আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। ঘরে চাল নেই। স্ত্রী অসুস্থ। মাছ পাইনি, চাল কিনব কীভাবে, সেই চিন্তায় আছি।
সুরেশ্বর ঘাটের জেলে বাবুল ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত যে মাছ পেয়েছি, তা ৭০০ টাকায় বিক্রি করছি। আমরা নৌকায় ৫ জন মানুষ। খরচের টাকাই এখনো উঠেনি।
আরেক জেলে নজির বেপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি বরাদ্দের চাল এখনও পাইনি। ঋণ করে চলেছি এতদিন। নদীতে মাছ নেই। খালি হাতে ফিরেছি নৌকা নিয়ে। তেলের টাকা দেব কীভাবে সেই চিন্তা করছি।
সুরেশ্বর ঘাটের পাইকার ফখরুদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ছে না। তাই টাকা নিয়ে এসেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে মাছ না পাওয়ায়। এ অবস্থায় জেলেদের মতো আমরাও কষ্টে আছি।
নড়িয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জাকির হোসেন মৃধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মার বিভিন্ন অংশে চর পড়ে গেছে। গভীরতাও কমেছে। এ কারণে মাছ এখন কম পাওয়া যাচ্ছে। বর্ষার পানি এলে পানির গভীরতা বাড়লে মাছও বৃদ্ধি পাবে। তখন জেলেরা কাঙ্ক্ষিত মাছ পাবেন।
সাইফুল ইসলাম সাইফ রুদাদ/এসকেডি