ফাঁকা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যাত্রীর অপেক্ষায় যানবাহন
ঈদে যাত্রীর চাপ বাড়বে, সেই আশায় খুব ভোরে ময়মনসিংহ থেকে বাস নিয়ে গাজীপুর বাইপাসে এসেছেন সাদিক পরিবহনের চালক আইনুল ইসলাম। বেলা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পেয়ে অনেকটা হতাশ হয়ে তিনি যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর চৌরাস্তায়।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় আইনুলের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তিনি বলেন, আজকে মহাসড়কে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ বের হবেন, এমন চিন্তা করে খুব ভোরে আমি বাস নিয়ে সকাল ৮টার আগেই জয়দেবপুর চৌরাস্তায় চলে আসি। ধারণা ছিল খুব অল্প সময়ের মধ্যে যাত্রী বোঝাই করে ময়মনসিংহ চলে যাব। এটুকু যেতে দুই ঘন্টা লাগে, আবার ফিরতেও দুই ঘণ্টা। ইচ্ছে ছিল ৪ থেকে ৫টা ট্রিপ দেব কিন্তু যাত্রী না থাকায় সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেল।
ইমাম পরিবহনের চালক আনিস জানান, ঢাকার মহাখালী থেকে পুরো ভর্তি করে যাত্রী আনতে পারিনি। পথে পথে যাত্রীর জন্য দাঁড়াতে হচ্ছে। ঈদ যাত্রায় এমনটা হবে কেউ চিন্তা করিনি।
এদিকে গাজীপুর জেলার ভেতর চলাচল করে তাকওয়া পরিবহন। এসব পরিবহনের আসন সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ জনের। বাইরের জেলায় যাতায়াতের অনুমতি না থাকলেও তাকওয়া পরিবহনে দূরপাল্লার যাত্রীদের তুলতে দেখা গেছে।
গাজীপুরের বোর্ড এলাকায় একটি কারখানায় চাকরি করেন কিশোরগঞ্জের মাজেদুল ইসলাম। তিনিসহ আত্মীয়-স্বজন মিলে ১২ জন কিশোরগঞ্জ যাবেন। তিনি বলেন, আমার ২ বাচ্চাসহ মোট ১২ জন কিশোরগঞ্জে যাব। এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া চাচ্ছে। এখন আমরা পরিকল্পনা করেছি তাকওয়া পরিবহনের একটি মিনি বাস ভাড়া করে সঙ্গে আরও কয়েকজন যাত্রী তুলে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেব। এতে সময়ের সঙ্গে টাকা বাঁচবে, ভোগান্তিও কমবে।
হারিকেন এলাকায় একটি কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করেন মো. আবু রায়হান। তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময় জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহের ভাড়া বাস ভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। কিন্তু ঈদ যাত্রায় সেই ভাড়া বাস ভেদে ৫০০ টাকার বেশিও চাওয়া হচ্ছে। এর চাইতে কম বললে তারা গাড়িতে তুলছে না। প্রতিবাদেরও কোনো সুযোগ নেই।
ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে সৈকত পরিবহনের চালক লিয়াকত আলী বলেন, জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৫০০ টাকা ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই দামাদামি করে কিছু কম বললেও আমরা যাত্রী তুলে নিচ্ছি। ময়মনসিংহ থেকে ফেরার সময় আমাদের গাড়ি খালি আনতে হচ্ছে, ঈদ যাত্রার তেমন যাত্রী পাচ্ছি না। সে হিসেব করলে এটা খুব বেশি না।
এখনও গাজীপুর জেলায় অধিকাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণা না করায় পুরোপুরি ঈদ যাত্রা শুরু হয়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ ভিড় বাড়বে বলে আশা করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও ঈদে ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তি দূর করে ঘরে ফেরা নিশ্চিত ও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করছে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কংকন কুমার বিশ্বাস বলেন, ঈদ যাত্রায় মানুষের ঘরে ফেরা নির্বিঘ্ন ও নিশ্চিত করতে ভবানীপুর থেকে জৈনাবাজার পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তিনটি টহল টিম কাজ করছে, পাশাপাশি মোবাইল টিমসহ একটি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শিহাব খান/আরকে