যে কারণে সাতক্ষীরা-গোপালগঞ্জ যাবেন মোদি
কথিত আছে মা কালীকে ৫১ ভাগ করেছিলেন মহাদেব। এর খণ্ড যেখানে যেখানে পড়েছিল, সেসকল স্থান শক্তিপীঠ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে তীর্থস্থান হিসেবে রূপলাভ করে। সেই শক্তিপীঠের একটি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের ‘যশ্বোরেশ্বরী কালি মন্দির শক্তিপীঠ’। এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান।
মূলত এই শক্তিপীঠে পূজা দেওয়ার জন্য আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য জানিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. সুব্রত কুমার ঘোষ।
তিনি বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্দিরে প্রার্থনার মধ্যদিয়ে দিনের কাজ শুরু করেন। এর আগে যখন তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এবারের সফরে তিনি শ্যামনগরের যশ্বোরেশ্বরী কালি মন্দিরে পূজার মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করবেন। ২৭ মার্চ সকাল ৯.৫০ মিনিটে বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে অবতরণের পর ১০.১০ মিনিটে শ্যামনগর ত্যাগ করবেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। মূলত সাতক্ষীরার এই মন্দিরে তিনি আসছেন পূজা দিতে। এর বাইরে কোনো উদ্দেশ্য নেই। পূজা শেষে স্থানীয় কয়েকজন সনাতন ধর্মাবলম্বীর সঙ্গে কথা বলে বিদায় নেবেন।
এ ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলছে নির্বাচনী তোড়জোড় ও প্রচার-প্রচারণা। পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের একটি বড় অংশ হলো মথুয়া সম্প্রদায়। মথুয়া মতবাদের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার ওড়াকান্দিতে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে তাদের সমর্থন পেতে মোদি মথুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর ওইদিনই ঢাকায় ফিরবেন এবং ভারতে চলে যাবেন।
শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে শ্যামনগর উপজেলার গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল স্তরের কর্মকর্তা, সদস্যরা গোটা এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। বর্তমানে মন্দিরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র পূজা দিতে আসাদের নাম তালিকা করে মন্দিরের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
শ্যামনগরের যশ্বোরেশ্বরী কালিমন্দির শক্তিপীঠের সেবায়েত পরিবারের সদস্য গবেষক জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানান, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে তীর্থস্থানটির সকল প্রস্তুতি অত্যন্ত ভালো। এটি একটি বিখ্যাত শক্তিপীঠ। শুধু সনাতন ধর্মের নয়, অন্য ধর্মের লোকেরাও এখানে আসেন, মানত করেন।
শ্যামনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মন্দিরের সাজ-সজ্জার কাজ চলমান রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাতক্ষীরায় আগমন উপলক্ষে মন্দির এলাকায় সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যরা আগমন নির্বিঘ্ন করতে রাতদিন কাজ করছেন।
আকরামুল ইসলাম/এসপি