৩ উপজেলায় যানবাহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিল কেএনএ
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহতদের মরদেহ বম অ্যাসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে লাশ গ্রহণ করতে আসেনি স্বজনরা। শনিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর ৮টি মরদেহ বম অ্যাসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ‘ভা তে কুকি’ (Va Te Kuki) নামে একটি ফেসবুক আইডির মাধ্যমে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)। ঘোষণা না মানলে চলন্ত গাড়িতে ব্রাশ ফায়ারের হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, রোয়াংছড়ি ও রুমার সীমান্তবর্তী খামতাম পাড়া এলাকায় কেএনএ ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ-সংস্কার) মধ্যে গোলাগুলিতে ৮ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের ময়নাতদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। তবে স্বজনরা লাশ গ্রহণ করতে না আসায় বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম অ্যাসোসিয়েশনের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- ভানদু বম (৩৫), সাংখুম বম (৪৫), সানফির থাং বম (২২), বয়ে রেম বম (১৭), জাহিম বম (৪০), লাল লিয়ান নাং বম (৪৪) ও লালঠা জার বম (২৭)। অপরজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বম অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি লাল জার বম জানান, খানতাম পাড়ার ঘটনায় নিহতদের লাশগুলো গ্রহণ করেছি। মরদেহগুলো খ্রিষ্টান ধর্মীয় রীতি অনুসারে দাফনের জন্য তাদের নিজ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুই সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় পাহাড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্ক কাটেনি রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে। ভয়ে আতঙ্কে ইতোমধ্যেই গ্রাম ছেড়েছেন খামতাম পাড়ার আশপাশের দেড় শতাধিক পরিবার।
তাদের মধ্যে রোয়াংছড়ি সদরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ৯০ পরিবারের ১৭৮ জন। অন্যদিকে রুমায় আশ্রয় নিয়েছের ৬০ পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশু। আশ্রয় গ্রহণকারীদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খাবার ও পানি সরবরাহ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের পর স্বজনরা উপস্থিত না থাকায় বম অ্যাসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তবে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে সন্ত্রাসীদের হুমকির বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য জানা নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
মোহাম্মদ আব্দুর রহিম/ওএফ