রোয়াংছড়িতে নিরাপত্তা জোরদার, মরদেহ নিতে আসেনি স্বজনরা
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় জনশূন্য হয়ে পড়া গ্রামগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শনিবার (৮ এপ্রিল) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়টি এক সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম।
এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছি। আমরা নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো পর্যালোচনা করে দেখছি। রোয়াংছড়ির এ ঘটনার পর আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে রোয়াংছড়ি সদরের রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া গ্রামবাসীদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ করছি। তাদের মধ্যে যেন ভয়ভীতি কাজ না করে সেজন্য তাদের সাহস দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের যে সমস্ত এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি, ক্যাম্প, চেকপোস্ট রয়েছে সে সমস্ত জায়গাগুলোতে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি। ওই এলাকায় যারা বসবাস করে তাদের সব সময় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনার পর আতঙ্কে পালিয়ে আসা ২০০ জনেরও বেশি লোক রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। অন্যদিকে রুমা উপজেলার বাম কমিউনিটি হলে ৬০ জনেরও বেশি লোক আশ্রয় নিয়েছেন। আমাদের দুইটি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্বে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনসহ তাদের সঙ্গে কথা বলে তারা কবে কীভাবে ফিরবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, গোলাগুলির ঘটনায় বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গ থেকে নিহত আটজনের মরদেহ এখনও সংগ্রহ করেনি স্বজনরা। তবে মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে স্থানীয় বম সম্প্রদায়ের সংগঠন ‘বম সোশ্যাল কাউন্সিল’ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে মরদেহগুলো হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাতে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস সংস্কার) সদস্যদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়। পরে শুক্রবার সকালে সেখানে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত আটজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। রোয়াংছড়ি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পর আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় প্রায় ২০০টির মতো পরিবার।
মোহাম্মদ আব্দুর রহিম/এবিএস