ইলিশা ফেরিঘাটে যানজট, বিপাকে তরমুজ ব্যবসায়ীরা
ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটের দুটি ফেরি বেশ কয়েক দিন ধরে বন্ধ থাকায় ইলিশা ফেরিঘাটে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে পচনশীল পণ্য নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে তরমুজ ব্যবসায়ীরা বেশি বিপাকে পড়েছেন।
রোববার (২ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাটে যাওয়ার জন্য ইলিশা ফেরিঘাটে প্রায় অর্ধশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ফেরিঘাটের রাস্তায় অপেক্ষায় রয়েছে। এতে ফেরিঘাটে দীর্ঘ যানজটের কারণে বিপাকে পড়েছেন তরমুজ ব্যবসায়ীরা। সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পাড়ায় ঘাটে ট্রাকের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরমুজ।
ইলিশা ফেরিঘাটে চরফ্যাশন থেকে ট্রাকে করে তরমুজ নিয়ে আসা চাষি আমির হোসেন আজহারী বলেন, আজকে ভোররাতে চরফ্যাশন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উদ্দেশ্যে ট্রাকে করে তিন হাজার পিস তরমুজ নিয়ে রওনা হয়েছি। গাড়িতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার তরমুজ আছে। সঠিক সময় তরমুজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া না পৌঁছাতে পারলে নষ্ট হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ঘাটে গাড়ির দীর্ঘলাইন, কখন ফেরি পাব তাও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। এ বছর ৯ কানি জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আজকে ট্রাকে প্রায় ৫ লাখ টাকার তরমুজ আছে। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের বেশ কিছু তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে।
মো. আজাদ বলেন, আমি চরফ্যাশনের আবু বকর ইউনিয়ন থেকে গতকাল রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে তরমুজ নিয়ে ইলিশা ফেরিঘাটে এসে ফেরির জন্য বসে আছি। এতে কিছু কিছু তরমুজে পচন ধরেছে। ঘাটের লোকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিকেলের ফেরিতে পার হতে পারব।
এদিকে গত সোমবার (২৭ মার্চ) রাত ১০ টায় এ ফেরিঘাটে থাকা তরমুজ বোঝাই একটি গাড়ি তিন দিনেও ফেরি না পাওয়ায় গাড়িতে থাকা তরমুজ পচে যায়। পরে তরমুজের মালিক ঘাটে তরমুজ ফেলে পালিয়ে যান।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুট দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ যাতায়াত করে। ২০০৬ সালের এপ্রিলে তিনটি ফেরি নিয়ে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ফেরিঘাট চালু হয়। এখন এই নৌরুটে ছয়টি ফেরি চলাচল করলেও বেশ কয়েক দিন ধরে কলমিলতা ও কুসুমকলি নামে দুটি ফেরি বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ইলিশা ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. পারবেজ জানান, কাঁচামালের গাড়িগুলো সিরিয়ালে আগে দেওয়া হয়। নাব্যতা সংকটে ভোলা- লক্ষ্মীপুর রুটে স্বাভাবিক গতিতে ফেরি চলাচল করতে পারছে না। আশা করি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কুসুমকলি ফেরি আগামী তিন দিনের মধ্যে চলাচল করতে পারবে।
আরএআর