সরকারি গাড়িচালক শিপন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী!
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেতে সরকারি গাড়িচালক শাহাদাত হোসেন শিপন প্রার্থী হয়েছেন। একজন সরকারি চাকরিজীবী কীভাবে রাজনৈতিক দলের নেতা বা প্রার্থী হন এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানান সমালোচনা। এর আগে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন।
শাহাদাত লক্ষ্মীপুর প্রাণী সম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের গাড়িচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি ডেপুটেশনে কুমিল্লা প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বে রয়েছেন। তবে লক্ষ্মীপুর থেকেই তিনি বেতন ভাতা পান।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ জন নেতা জানায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখনও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। সম্মেলনের আগ থেকেই শাহাদাত নিজেকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়েছে। তিনি সরকারি চাকরি করেন। এর আগেও তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এখনও তিনি সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে উপজেলা ও জেলা নেতাদের কাছে বিভিন্নভাবে লবিং করছেন। পদের জন্য টাকা লেনদেনেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শাহাদাত হোসেন শিপনের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। এসময় শাহাদাত বলেন, আমি এর আগেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলাম। এখন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছি। পদ পেলে চাকরি ছেড়ে দেব। চাকরিতে আমার ২৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। পদ পেলেই আমি এলপিআরে যাবো।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাইফুল হাসান পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, শাহাদাত বলেছে তিনি এনজিওতে চাকরি করেন। সরকারি চাকরি করেন কিনা তা আমার জানা নেই। আর এখনও কমিটি দেওয়া হয়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ যোবায়ের হোসেন বলেন, শাহাদাত আমাদের জেলা কার্যালয়ের গাড়ি চালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লাতে ডেপুটেশনে রয়েছেন। তিনি রাজনীতি করেন কিনা তা আমাদের জানা নেই।
কুমিল্লা প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক ফারহানা নাসরিন মোবাইল ফোনে বলেন, শাহাদাত আমার অফিসে কর্মরত রয়েছেন। তিনি লক্ষ্মীপুরে রাজনীতি করেন কিনা তা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি জানতে পেরেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা স্বীকার করেননি।
কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, সরকারি চাকরিজীবীরা চাকরিরত অবস্থায় কোনোভাবেই রাজনীতি করতে পারবেন না। শাহাদাতের রাজনীতি করার বিষয়ে কেউ আমাদের জানায়নি।
এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শাহাদাত কর্মস্থলে নিয়মিত আসেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দশনা রয়েছে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএএস