কক্সবাজারে লবণ ও পানের বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা
কক্সবাজার উপকূলের অধিকাংশ লোকজন লবণ ও পানের ওপর নির্ভরশীল। এবার পণ্য দুটির বাম্পার ফলন হয়েছে। সম্প্রতি দামও বেড়েছে। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত চাষিরা। এতে তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক গতি সঞ্চার হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
লবণ চাষিরা জানান, এরই মধ্যে লবণের উৎপাদন একর প্রতি ৭০০ মণ অতিক্রম করেছে। বৃষ্টিপাতের কারণে দুই দিন উৎপাদন বন্ধ থাকলেও এখন পুরোদমে আবার উৎপাদন শুরু হয়েছে। আর লবণের দাম দুই সপ্তাহ আগে কিছুটা কমলেও এখন আবার বেড়েছে।
লবণ চাষি সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক সাজেদুল করিম জানান, চলতি মৌসুমে লবণের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হবে। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হওয়ায় চাষিরা লবণ উৎপাদনে আরও মনোযোগী হয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে চাষিরা এখন প্রতি মণ লবণে খরচ বাদ দিয়ে ৩৮০ টাকার বেশি পাচ্ছেন।
একইভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন পান চাষিরা। বর্তমানে মিষ্টি পানের বিড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা দরে, যা যাবৎকালের সর্বোচ্চ দাম। যার কারণে উচ্ছ্বসিত পান চাষিরাও।
মহেশখালী বৃহত্তর পান ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মিয়া জানান, আমরা বিগত সময়ে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দরে এক বিড়া পান বিক্রি করেছি। চলতি মৌসুমে এক বিড়া রেকর্ড ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কুতুবদিয়া ছাড়া উপকূলের অধিকাংশ মানুষই পান চাষের সঙ্গে জড়িত। যার ফলে সন্তোষজনক লাভের মুখ দেখেছেন চাষিরা।
মিষ্টি পান চাষি হোয়ানক ইউনিয়নের জাফর আলম জানান, মিষ্টি পানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হওয়ায় আমরা সুন্দর জীবনযাপন করছি। বাজারে পান নিয়ে গেলেই বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা পাওয়া যায়। যারা পান চাষ করেছেন সবাই লাভবান হয়েছেন। পানের বর্তমান দর অব্যাহত থাকলে সাধারণ মানুষের আর্থিক সংকট কেটে যাবে।
বিসিকের তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টন লবণের চাহিদাকে ঘিরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলার টেকনাফ, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, কক্সবাজার সদর, ঈদগাঁও, মহেশখালী, চকরিয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় ৬৬ হাজার ২৯১ একর জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে। গত মৌসুমে কক্সবাজারের ৬৩ হাজার ২৯১ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৩ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। এবার লবণ উৎপাদন বাড়ছে প্রায় ৩ হাজার একর জমিতে, এ কারণে উৎপাদনও বাড়বে।
বিসিকের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল জানান, বিগত সময়ে প্রায় ৬০ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হলেও চলতি মৌসুমে লবণ চাষের জমি ও চাষির সংখ্যা বেড়েছে। আশা করি, লবণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে কোনো সমস্যা হবে না। বর্তমানে যতটুকু আশা করেছি তার চেয়ে বেশি লবণ উৎপাদিত হয়েছে।
মহেশখালী কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, সব কৃতিত্বই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি পান ও লবণের বিষয়ে অবগত হয়েছেন বলেই দেশে উৎপাদিত এই পণ্যের দরে গতি সঞ্চার হয়েছে।
সাইদুল ফরহাদ/এসএসএইচ/