রেলের জায়গা দখল করে জাতীয় পার্টির কার্যালয় নির্মাণ!
নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের জায়গা দখল করে লাইন ঘেঁষে জাতীয় পার্টির উপজেলা শাখার পাকা অফিস ঘর (কার্যালয়) নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। পৌর শহরের শেরে বাংলা সড়কে সাবেক টিএন্ডটি অফিসের বিপরীতে স্থায়ীভাবে এ কার্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় জাতীয় পার্টির সৈয়দপুর উপজেলা ও পৌর শাখার কার্যালয় শহরের জসিম বিল্ডিংয়ের পেছনে রেলওয়ে বহুতল ভবনের নিচে জাপা নেতা জয়নাল আবেদীনের লিজকৃত জায়গায় ছিল। এরপর সেটি সাবেক সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরীর বিজলী সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শওকত চৌধুরী সিনেমা হলটি ভেঙে ফেললে জাতীয় পার্টির অফিসটি সাবেক টিএন্ডটি অফিসের সামনে রেলওয়ের ফাঁকা জায়গায় স্থানান্তর করা হয়। ২০০৮ সালে টিনের বেড়া ও ছাউনি নিয়ে রাতারাতি রেলওয়ে জায়গায় অফিস ঘরটি তৈরি করা হয়। সেই থেকে অফিস ঘরটিতে উপজেলা জাতীয় পার্টির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসা হচ্ছে। গত দুই-তিন থেকে দোচালা টিনসেড অফিস ঘরটি ভেঙে সেখানে স্থায়ীভাবে পাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দোচালা টিনসেড অফিস ঘরের বেড়ার টিন খুলে ইটের গাঁথুনি করা হচ্ছে। বেশ কয়েকজন রাজমিস্ত্রি ও তাদের সহকারী মিলে দিন-রাত দ্রুতগতিতে ইটের গাঁধুনির কাজ করছেন। এর উত্তর পাশে বেশ কিছু পরিমাণ নতুন ইট নিয়ে এসে মজুত করে রাখা হয়েছে। টিনসেট ঘরে ভেতরে রয়েছে বেশ কয়েক ব্যাগ সিমেন্টের বস্তা। আর সেখানে বসে পাকা অফিস নির্মাণ কাজ তদারকি করছিলেন জাতীয় পার্টির সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব ও নীলফামারী -৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আহসান আদেলুর রহমান আদেলের স্থানীয় প্রতিনিধি জি এম কবির মিঠুসহ অন্যান্যরা।
সড়কের পাশের রেলওয়ে জায়গায় দখল করে পাকা অফিস ঘর নির্মাণ বিষয়ে জাতীয় পার্টির সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব জি এম কবির মিঠু বলেন, অনেকে রেলওয়ে জায়গায় জমি দখল করে অনেক বড় বড় অবকাঠামো করছেন। আর আমরা স্বল্প জায়গায় একটি দলীয় অফিস (কার্যালয়) ঘর নির্মাণ করছি মাত্র। সরকারি কোনো বরাদ্দ থেকে নয়, স্থানীয় জাপা (এ) নেতা শিল্পপতি মো. সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক আমাদের দলীয় কার্যালয়টি নির্মাণের সকল ব্যয় নির্বাহ করছেন। আর সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক নিজেই অফিস ঘরের নির্মাণকাজের সার্বিক তদারকি করছেন।
সৈয়দপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছে। শুনেছি সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ওবাইদুল ইসলাম রতন এ বিষয়টি সৈয়দপুর রেলওয়ে থানাকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন। সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে আমি সেখানে যাব।
রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) মো. শরিফুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্টেশন মাস্টার মো. ওবাইদুল ইসলাম রতন বলেন, স্টেশন এলাকায় রেললাইন ঘেঁষে জাতীয় পার্টির পাকা অফিস ঘর নির্মাণের বিষয়টি রেলওয়ে পাকশী বিভাগকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এছাড়াও সৈয়দপুর রেলওয়ে থানাকে ঘটনাটি লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিউল ইসলাম বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টারের লিখিত অভিযোগ পেয়ে থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। আমরা সেখানে তাদের পাকা অবকাঠামো নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলেছি।
শরিফুল ইসলাম/আরকে