‘আমাকে ভাইরাল করলে তোর ছবিও ভাইরাল করে দিমু’
‘তুই আমার বাসায় গিয়ে আমার তালাবদ্ধ ঘরের সামনে অবস্থান করে ভরণপোষণের দাবি করতেছোত। আমার বিরুদ্ধে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করে আমাকে ভাইরাল করার চেষ্টা করতেছোত। আমার বন্ধুবান্ধব, ব্যাচমেট ও আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে ফোনের পর ফোন করে এসব জানাচ্ছে। আমার চরিত্র ফ্ল্যাশ করে দিচ্ছোত। শোন, নিউজ করে আমাকে ভাইরাল করলে তোর ছবিও ভাইরাল করে দিমু।’
ভরণপোষণের দাবিতে বাড়িতে অবস্থান নেওয়া স্ত্রীকে হুমকি দিয়ে এসব কথা বলার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (৮ মার্চ) ভরণপোষণের দাবিতে পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর অবস্থান নেওয়ার খবর ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নিজের স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এসআই আওলাদের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। তার বাবা-মা বর্তমানে ভোলা শহরের অফিসার পাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। সেখানেই তার স্ত্রী অবস্থান নেন। আওলাদের স্ত্রী রিনা বেগম মানিকগঞ্জের বাইচাইল গ্রামের বাসিন্দা। এসআই আওলাদ বরিশালের মুলাদি থানায় কর্মরত ছিলেন। কয়েক দিন আগে তাকে সেখান থেকে ক্লোজড করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
গতকাল সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর রাতে স্ত্রী রিনা বেগমের ইমু ও হোয়াটসঅ্যাপে কল ও মেসেজ দিয়ে এমন হুমকি দেন আওলাদ।
রিনা বেগম ঢাকা পোস্টকে জানান, গতকাল বুধবার দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে তার স্বামী আওলাদের বিরুদ্ধে করা সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে ইমু ও হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। প্রাণনাশের হুমকির পাশাপাশি রাতের মধ্যে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
টিকটক ভিডিওর বিষয়ে তিনি জানান, তার স্বামী আওলাদের মোবাইলে তার একটি পার্সোনাল টিকটক আইডি রয়েছে। অবসর সময় কাটাতে তিনি বাসায় মাঝে মধ্যে টিকটক করতেন। তবে ওইসব টিকটক ভিডিও তিনি কোথাও পোস্ট করতেন না।
তার দাবি, আওলাদের বিরুদ্ধে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ন্যায়বিচারের দাবিতে অভিযোগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আওলাদ তার টিকটক ভিডিও নিকট আত্মীয়দের কাছে পাঠাচ্ছেন। তার আপত্তিকর ছবি অথবা টিকটিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনি মামলা করবেন বলেও জানান।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালেও ভরণপোষণের দাবিতে স্বামীর তালাবদ্ধ ঘরের সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে রিনা বেগমকে।
ধনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন জানান, গতকাল রাতে আওলাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। আওলাদ জানিয়েছে, তার স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মামলা করায় তাকে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। সেখান থেকে সে কোথাও যেতে পারছে না। সেজন্য তার পরিবার ও স্ত্রীকে নিয়ে ফয়সালা করার জন্য বলেছে। কিন্তু তার স্ত্রী ভরণপোষণের দাবি ব্যতীত অন্য কোনো সমাধান চাচ্ছে না।
আরএআর