ঋণ শোধ করতে না পেরে পল্লী চিকিৎসকের আত্মহত্যা
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বদরগঞ্জে বাকি বিল্লাহ বাবলু (৫০) নামের এক পল্লী চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (৫ মার্চ) বিকেলে বদরগঞ্জ বাজারে নিজ ওষুধের দোকান থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে সিন্দুরিয়া ক্যাম্প পুলিশ।
মৃত বাকি বিল্লাহ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের দশমী গ্রামের বসির উদ্দিনের ছেলে। তিনি বদরগঞ্জ বাজার কমিটির ক্যাশিয়ার ছিলেন।
বাজারে কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানান, বাকি বিল্লাহ দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে তিনি বদরগঞ্জ বাজারে একটি ওষুধের দোকান দেন। এর মধ্যে তিনি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি বদরগঞ্জ বাজার কমিটির ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেন। টাকার জন্য সবাই তাকে চাপ দিচ্ছিল। তাই পাওনাদারদের চাপে তিনি নিজ ফার্মেসিতে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাকি বিল্লাহর ছেলে আমির হাসান বলেন, বাবা পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। ঋণগ্রস্ত হয়ে চাপ সইতে না পেরে তিনি নিজ দোকানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
বদরগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি মিন্টু বলেন, ‘বাজারে ২৫ সদস্যের একটি সমিতি আছে। সমিতির সদস্যরা প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে জমা দেন। ১০ দিন পরপর লটারির মাধ্যমে সেসব টাকা একজনকে দেওয়া হতো। এই সমিতির ক্যাশিয়ার ছিলেন বাকি বিল্লাহ। তিনি কাউকে না জানিয়ে সমিতির ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। কয়েকবার মিটিংয়ের পর তিনি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে ৬ মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলেন। অনেকেই ধারণা করছে, বাকি বিল্লাহ বিভিন্ন মানুষের থেকে ধার ও সমিতি টাকা ফেরত দিতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন।
সিন্দুরিয়া ক্যাম্প পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পেশায় তিনি পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি তিনি বিভিন্ন মানুষের থেকে ধার নেওয়া টাকা ফেরত দিতে পারছিলেন না। এছাড়া তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ ছিলেন। পাওনাদারদের চাপে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
আফজালুল হক/আরকে