আমরা আর কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হতে চাই না : চুন্নু
জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, বিগত নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগকে সাহায্য করেছি। আমরা ভেবেছিলাম আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল, বঙ্গবন্ধুর দল। বিএনপিকে সাপোর্ট না করে আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট করলে তারা সুশাসন কায়েম করবে, দুর্নীতি বন্ধ করবে, মানুষের কল্যাণ করবে, লুটপাট করবে না। কিন্তু আমরা খুবই আশাহত হয়েছি। আমরা আমাদের জন্য তো কিছু চাইনি। সরকার সমস্ত কিছুকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। আমরা আর কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হতে চাই না। আগামীতে আমরা এককভাবে নির্বাচন করতে চাই। আগামী নির্বাচনে আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব।
শুক্রবার (৩ মার্চ) দুপুরে খুলনার ডাক বাংলা দলীয় কার্যালয়ের সামনে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সন্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, দেশের মানুষ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের ওপর অসন্তুষ্ট। মানুষ মন থেকে দুটি দলকে চায় না। আমরা ক্ষমতায় গেলে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা চালু করব। ঢাকাকেন্দ্রিক প্রশাসনকে আমরা বিকেন্দ্রীকরণ করব। কর্মবিমুখ শিক্ষার পরিবর্তে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করব।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন চাই। বর্তমান নির্বাচন সিস্টেম একটা ভুল সিস্টেম। আমরা চাই আনুপাতিক হারে নির্বাচন, যে নির্বাচনে প্রার্থী থাকবে না। মার্কা থাকবে। মার্কায় ভোট কাস্টিং হবে। ভোটে যে দল যত পার্সেন্ট ভোট পাবে, সে দল থেকে তত পার্সেন্ট এমপি হবে।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রতিবেশী দেশ নেপালে ৫০ শতাংশ ইলেকশন এই আনুপাতিক হার সিস্টেমে হয়। নেপাল পারলে আমরা পারবো না কেন? কারণ বড় দুটি দল চায় না। তারা চায় একা একা নির্বাচন করতে।
তিনি বলেন, সাংবিধানিক পদগুলোতে অনেক অযোগ্য লোক। আমরা ক্ষমতায় গেলে সাংবিধানিক পদগুলোতে যোগ্য লোক নিয়োগ দেওয়ার যথাযথ ব্যবস্থা করব।
সম্মেলনে শফিকুল ইসলাম মধু এবং এম হাদিউজ্জামানকে পুনরায় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব।
সম্মলনের উদ্বোধন করেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাসচিব মো. সাহিদুর রহমান টেপা। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, সংগঠনের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদার, উপদেষ্টা নাজনীন সুলতানা, অ্যাডভোকেট জহিরুল হক জহির, সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম সরু, শ্রমিক বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হোসেন জাহাঙ্গীর, নগর জাপার নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট মহানন্দ সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. সৈয়দ আবুল কাশেম, মোস্তফা জাহাঙ্গীর আলহাজ ইসমাইল খান টিপু ও আব্দুল ওয়াদুদ মোড়ল।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা জাপার সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম হাদিউজ্জাামান। ৫ বছর পর জেলা জাপার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর