সৈয়দপুরে এসেছে রেলের ৩০টি কোচ, চলবে পদ্মা সেতু দিয়ে
নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পদ্মা সেতুর জন্য চীন থেকে আমদানি করা আরও রেলের ২০টি কোচ পৌঁছেছে। এর আগে ১০টি কোচ এসে পৌঁছায় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। এনিয়ে ৩০টি কোচ রয়েছে এ কারখানায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এসব কোচ রেলের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কোচগুলো পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চীনা রেলওয়ের রোলিং স্টক করপোরেশন থেকে ১০০টি কোচ আমদানি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম চালান ৪০টির মধ্যে ৩০টি কোচ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আনা হয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। কোচগুলো চীনের সিআরআরসি ট্যাংসন কোম্পানির তৈরি। তবে এর অনেক যন্ত্রাংশ জার্মানি ও রোমানিয়া থেকে এসেছে।
এক সপ্তাহের মধ্যে এসব কোচের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। এরপর এগুলো হস্তান্তর করা হবে রেলের পরিবহন বিভাগের কাছে। পর্যায়ক্রমে পরবর্তী চালানের কোচগুলো ওই কারখানায় চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপ ইয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, চীনা প্রকৌশলীরা স্থানীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে কোচগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যস্ত। কোচগুলোর অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা (ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন) বেশ আধুনিক। আরামদায়ক আসনগুলোতে রয়েছে ফোল্ডিং ব্যবস্থা। আছে ল্যাপটপ ও মোবাইল চার্জ দেওয়ার পয়েন্ট। এছাড়া ডিজিটাল মনিটর ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে প্রতিটি কোচে। কোচের টয়লেটগুলোও পরিবেশবান্ধব। হাই কমোড ও লো-কমোডের ব্যবস্থা আছে। কোচগুলো জাতীয় পতাকার আদলে লাল-সবুজে রাঙানো।
কারখানার ক্যারেজ সপের প্রধান ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম বলেন, চীন থেকে আমদানি করা কোচগুলোর মধ্যে কারখানায় এ পর্যন্ত ১২টি শোভন, ছয়টি এসি স্লিপার, ছয়টি এসি চেয়ার, তিনটি পাওয়ার কারসহ ৩০টি কোচ এসেছে।
তিনি আরও বলেন, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এসব ট্রেনে ভ্রমণ হবে আরামদায়ক। আগে আসা ১০টি কোচের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে। এ কাজে রেল কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তার পাশাপাশি চীনা বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (সিএমই) তাবাসসুম বিনতে ইসলাম বলেন, চীন থেকে আসা কোচগুলো আমাদের দেশে রেলপথে চলাচলের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় প্রস্তুত করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলবে আগামী জুন মাসের মধ্যে। ওই রুটে রেল ভ্রমণে যাত্রীরা আধুনিক সেবা পাবেন, যা নতুন এক অভিজ্ঞতা হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, চীন থেকে আনা কোচগুলোর মধ্যে তিন দফায় ৩০টি কোচ এ কারখানায় এসেছে। আমরা কোচগুলোকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। আমাদের হাতে যথেষ্ট সময় আছে। কাজেই এ নিয়ে তেমন কোনো চাপ নেই। খুব শিগগিরই এসব কোচের ট্রায়াল রান হবে।
শরিফুল ইসলাম/এমএএস