বান্দরবানে নতুন জঙ্গি সংগঠনের ১৭ সদস্যসহ আটক ২০
বান্দরবানের থানচির লোয়াংমুয়াল রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় টানা ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ১৭ সদস্য সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। একই সঙ্গে কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, গোলাবারুদ ও নগদ ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে র্যাবের অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৩৮ সদস্যকে আটক করা হয়েছিল। ফলে সব মিলিয়ে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের ৫৫ সদস্যকে আটক করা হলো।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় বান্দরবানে র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
আটককৃতরা হলেন- জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ারর সদস্য কুমিল্লা সদরের মো. আস সামী রহমান সাদ (১৯), বরগুনার বেতাগী এলাকার মো. সোহেল মোল্লা সাইফুল্লাহ (২২), পটুয়াখালী সদরের মো. আল আমিন ফকির মোস্তাক (১৯), কুমিল্লার লাঙ্গলকোট এলাকার মো. জহিরুল ইসলাম ওরফে ওমর ফারুক (২৭), পটুয়াখালী সদরের মো. মিরাজ হোসেন ওরফে দোলন, মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ীর রিয়াজ শেখ জায়েদ (২৪), পটুয়াখালীর মহিপুরের মো. ওবাইদুল্লাহ (২০), পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের জুয়েল মাহমুদ (২৭), টাঙ্গাইলের ধানবাড়ীর মো. ইলিয়াছ রহমান (৩২), ঝালকাঠি সদরের মো. হাবিবুর রহমান (২৩), কুমিল্লা সদরের মো. সাখাওয়াত হোসেইন (২১), বরিশালের কোতোয়ালির মো. আব্দুস সালাম রাকি (২৮), কুমিল্লার লাকসামের যোবায়ের আহমদ (২৯), পটুয়াখালীর মো. শামীম হোসেন (২৬), হবিগঞ্জের তাওয়াবুর রহমান সোহান (২০), বরিশালের মাহমুদ ডাকুয়া (২০), মাগুরার মোহাম্মদ আবু হুরাইরা (২২) এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের সদস্য লাল মোল সিয়াম বম, ফ্লাগ ক্রস, রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ির মালসম পাংকুয়া (৫২)।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তথাকথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া নিখোঁজ ৫৫ জন তরুণের মধ্যে ২৭ জনকে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। আরও ২৮ জনের খোঁজে র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে। যারা অর্থের বিনিময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতায় পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে নগদ ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এই টাকা অবৈধ পথে অস্ত্র কেনার জন্য জমা করেছিল। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে এ পর্যন্ত প্রথম দফায় ৫ জন, দ্বিতীয় দফায় ১০ জন, তৃতীয় দফায় ২ জনসহ মোট ১৭ জন জঙ্গি এবং তিন দফায় ১৭ জন কেএনএফ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। পাহাড়ে কেএনএফের সদস্য সংখ্যা ২০০ জন।
তিনি আরও জানান, অভিযানের সময় র্যাব সাড়ে তিনশ রাউন্ড গুলি করেছে, সন্ত্রাসীরা দুইশ রাউন্ডের মতো গুলি ছুড়েছে। আটজন র্যাব সদস্য গুলিবিদ্ধ হলেও মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত কেউ হননি। তারা সবাই ঝুঁকিমুক্ত এবং চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বম সম্প্রদায়ের কিছু বিপথগামী যুবক কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে তাদের আশ্রয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণে যুক্ত হয় সমতল থেকে আসা নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বেশ কিছু সদস্য। তাদের নির্মূলে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী।
আরএআর