ফেসবুকে এইচএসসির ফল পরিবর্তনের ফাঁদ
কুমিল্লায় এইচএসসির ফল পরিবর্তনের ফাঁদ পেতেছে একটি চক্র। চক্রটি পরীক্ষার্থীদের অধিক নম্বর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে পোস্ট দিয়ে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলা হয়। এরপর ফল পরিবর্তনের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।
প্রতারকের এমন ফাঁদে পড়ে বিকাশে দুই দফায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা হারিয়েছেন কুমিল্লার ইকরামুল করিম নামে এক ফল প্রত্যাশী। তিনি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষা দেন। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে।
ইকরামুল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেসবুকে ২০২২ নামের একটি গ্রুপে উত্তম কুমার ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি রেজাল্ট পরিবর্তনের কাজ চলছে বলে পাবলিক পোস্ট দেয়। সেখানে লেখা হয়- বোর্ড কর্মকর্তার মাধ্যমে ফলাফল পরিবর্তন করা সম্ভব। সাবজেক্ট খারাপের ফল পরিবর্তনসহ জিপিএ-৫ পাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে প্রয়োজনে ইনবক্সে ম্যাসেজ দেওয়ার জন্য বলা হয়। আমি প্রথমে ইতস্তত করলেও পরে আমি ওই আইডির ইনবক্সে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে জানানো হয়, তিনি শিক্ষাবোর্ডে কাজ করেন। পরে ম্যাসেজ আসে জিপিএ-৫ পেতে ৬ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হবে। একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে টাকা পাঠানোর জন্য বলা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রথমে ৫০০ টাকা দেওয়ার পর সেখান থেকে বাকি টাকা পাঠাতে বলে। পরে আরও ৫ হাজার টাকা পাঠাই। এরপরই ওই আইডি থেকে আমাকে ব্লক করে দেওয়া হয়। এছাড়া যেই বিকাশ নম্বর দেওয়া হয় সেটিও বন্ধ পাই। সব কথোপকথন আমার কাছে স্ক্রিনশট নেওয়া আছে।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. আসাদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে প্রতারকরা এমন সক্রিয় হয়ে উঠে। অসচেতন শিক্ষার্থীদের ফাঁদে ফেলে টাকা পয়সা নেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এটা জানা দরকার যে কোনোভাবেই ফল পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আমরা এর আগেও এমন ঘটনা জেনেছি ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতারকরা টাকা নেওয়ার পর মোবাইল নম্বর ও আইডি বন্ধ করে দেয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. আশফাকুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফল পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। না হয় তারা এমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারপরও শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরা যদি এমন প্রলোভনের কোনো খবর পায় তাহলে যেন অবশ্যই পুলিশকে জানায়। এটা সকলের প্রতি পুলিশের আহ্বান থাকবে।
আরিফ আজগর/এমজেইউ