প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে রাজশাহীতে উৎসবের আমেজ
রাত পোহালেই রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবুজ নগরীতে প্রধানমন্ত্রীকে বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রাজশাহীতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারণে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে পুরো রাজশাহী জুড়ে।
সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় এটিকে গুরুত্বপূর্ণ জনসভা হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। সভাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে রাজশাহীকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সব জায়গায় শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত সরকারের উন্নয়নের চিত্রের বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন। এছাড়া জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতা অবস্থান করছেন। সমাবেশের আগে দিনব্যাপী মাঠ পরিদর্শনসহ মিছিল-মিটিংয়ে মেতে রয়েছেন তারা।
কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, দীর্ঘ পাঁচবছর পর রাজশাহীতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের আগে বৃহৎ এই জনসভাকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা উন্মাদনার জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। সাত লাখ মানুষের সমাগমের যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, সেটাকে সামনে রেখেই নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে একযোগে কাজ করছেন।
এদিকে, কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে সমাবেশস্থল মাদ্রাসা মাঠসহ আশপাশের এলাকা। নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। জনসভার আগে মাদ্রাসা মাঠে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় নেতারা:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু ও রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন রাজশাহীতে উপস্থিত রয়েছেন।
এছাড়া রয়েছেন দলের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ স্থানীয় আওয়ামী নেতা-কর্মীরা। এদিন জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া দিনব্যাপী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মিছিল-মিটিং অংশ নেন তারা।
রাজশাহীতে একদিনের সফরে প্রায় ১ হাজার ৩১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া তিনি আনুমানিক ৩৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন তিনি। আর এর আগেই সমাবেশে যোগ দেবেন আওয়ামী লীগের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সভাস্থল প্রস্তুত হয়ে গেছে। এই জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। তাই ঈদগা মাঠও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগরজুড়ে মাইকে ভাষণ শোনা যাবে। সেই সঙ্গে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১২টি এলইডি স্ক্রিন স্থাপন করা হয়েছে। যাতে করে মানুষ জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে পায়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। দুপুর ১২টায় নেতাকর্মীরা মাঠে প্রবেশ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখে কথা শোনার জন্য রাজশাহীবাসীর মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। নারীদের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। তারা প্রধানমন্ত্রীকে দেখা এবং প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনার অপেক্ষায় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে। এছাড়া সভাস্থলের আশপাশে দেড় হাজার বোতল পানির ব্যবস্থা থাকবে। শুধু তাই নয়, ওয়াসার পানি ভর্তি গাড়ি থাকবে।
শাহিনুল আশিক/কেএ