চিকিৎসার জন্য ভ্যান বিক্রি, সুস্থ না হওয়ায় বিষপানে আত্মহত্যা
দীর্ঘদিন যাবত পেটের ব্যাথায় ভুগছিলেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় পেয়ারাতলা গ্রামের ভূমিহীন পাড়ার আবুল হোসেন (৪৫)। বিভিন্ন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও সুস্থতা লাভ করতে পারেননি তিনি। এমনকি চিকিৎসার ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে উপার্জনের শেষ সম্বল ভ্যানটিও বিক্রি করতে হয়েছে তাকে। তবুও মেলেনি সুস্থতা। শেষমেষ হতাশায় বিষপান করে আত্মহত্যা করেন আবুল হোসেন।
রোববার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বিষপানের পর চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
পরিবারের সদস্যরা জানায়, দীর্ঘদিন যাবত পেটের ব্যাথায় ভুগছিলেন আবুল হোসেন। তিনি পাখিভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। তার ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিকও ভ্যানচালক। এই টানাটানির সংসারে আবুল হোসেন বিভিন্ন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন। তবুও সুস্থ হতে পারেননি। পেটের ব্যাথা তীব্রতা ধারণ করলে বাধ্য হয়ে কদিন আগে উপার্জনের শেষ সম্বল ভ্যানটি বিক্রি করে চিকিৎসা নেন আবুল হোসেন। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। পেটের ব্যাথায় কাতর হয়ে পড়েন তিনি। পরে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির সামনে মাঠে গিয়ে বিষ পান করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পরিবারের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিন বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নূর জাহান রুমি ঢাকা পোস্টকে বলেন, তার পাকস্থলী ওয়াস করে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। বিকেল ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত পেটের ব্যাথায় ভুলছিলেন আবুল হোসেন। নিজের ভ্যান বিক্রি করে চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হননি। পরে হতাশায় বিষপানে আত্মহত্যা করেন। অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আফজালুল হক/আরকে