জিকির-আসকারে সময় পার করছেন মুসল্লিরা
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ পাড়ের মুসুল্লিরা জিকির-আসকারে সময় পার করছেন। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আজ বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হকের উর্দু ভাষায় আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ইজতেমা ময়দানের ইতোমধ্যে লাখো মুসল্লি ময়দানে প্রবেশ করছেন।
বাস, ট্রাক, পিকআপ, ট্রেন ও নৌপথে এসে মুসুল্লিরা যোগ দিচ্ছেন ইজতেমায়। দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজে অংশ নিতেও দলে দলে মুসল্লিরা আসছেন ইজতেমা ময়দানে। বিশ্ব ইজতেমায় বৃহস্পতিবার দুপুরে কোনায় কোনায় ইজতেমা মাঠ মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে গেছে। মূল মাঠে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা কামারপাড়া সড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষে ফুটপাতে ও মাঠের আশেপাশের খোলা জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। তারা মূল মাঠে বাইরে ফুটপাত, সড়কের ধারে বসে পড়েছেন। জিকিরে সময় পার করছেন।
মানিকগঞ্জ থেকে ১৯ সদস্য নিয়ে ইজতেমা মাঠে এসেছেন মাওলানা মনিরুল হক। তিনি জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে পিক আপযোগে তারা এসেছেন। মূল খিত্তায় জায়গা না পেয়ে সড়কের পাশে বসেছেন। এসেই দলে বিভক্ত হয়ে তিন সদস্য রান্নার কাজ করছেন। বাকিরা জিকির আসকার করছেন। দুজন সদস্যকে ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের সহযোগিতার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন জামায়াতের আমীর।
একই কথা জানালেন টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে জামাত নিয়ে আসা মাওলানা শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ১৬ জন সদস্য নিয়ে তারা ইজতেমা মাঠে এসেছেন। আমীরের নির্দেশনা অনুযায়ী দুজন রান্নার কাজ করছেন। বাকি সদস্যদের নিয়ে জামাতের মুরুব্বীরা বিভিন্ন হাদিসের আলোচনা করছেন। পরপর দুই বছর ইজতেমা না হওয়ায় এবারের ইজতেমায় সাধারণ মুসল্লিরাও উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আগেভাগেই অবস্থান নিয়েছেন এবং অধিক সংখ্যক মুসল্লি উপস্থিত হয়েছে।
প্রায় এক বর্গ কিলোমিটারের বিশাল মাঠটিকে বাঁশের খুঁটির ওপর চটের ছাউনির প্যান্ডেলে মুসল্লিদের বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা-মাইক। এছাড়াও লাগানো হয়েছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতি। দেশীয় তাবলিগ মুসল্লিদের জন্য জেলা অনুসারে আলাদা ৯১ ভাগে (খিত্তায়) ভাগ করা হয়েছে। শীত উপেক্ষা করে মঙ্গলবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে নির্ধারিত খিত্তায় এসে অবস্থান নিচ্ছেন। বুধবার সন্ধ্যার আগেই প্রায় পুরো ময়দান পূর্ণ হয়ে যায়। বিদেশি মুসল্লিদের জন্য মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে আধুনিক সুবিধা-সম্বলিত আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো ময়দান এলাকায় থাকছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, পুলিশ, র্যাবের কন্ট্রোল রুম।
শিহাব খান/আরকে