পারলে আজকে সন্ধ্যার মধ্যে পদত্যাগ করেন, সময় ভালো না : দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সময় শেষ। সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পারলে আজকে সন্ধ্যার মধ্যে পদত্যাগ করেন, না হলে কালকে। সময় ভালো না। বিএনপি আ.লীগের শত্রু না। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, কখন কি হয় বলা যায় না। যদি পদত্যাগ না করেন এই বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে পদত্যাগে বাধ্য করবে। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি যেকোনো মুহূর্তে সংবাদ আসবে এই সরকারের প্রধান পদত্যাগে বাধ্য হয়েছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা মহানগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয় চত্বরে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দুদু এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই সরকার অবৈধ। এই সরকার ভোটারবিহীন। তারা নিশিরাতে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় বসেছে। আমাদের দাবি একটাই-এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। অথর্ব মাজাভাঙা নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন করে কমিশন গঠন করতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
দুদু বলেন, পুলিশ ও শাসক দলের ক্যাডার দিয়ে গণতন্ত্র মুক্তিকামী বিএনপির নেতাকর্মীদের আর দমিয়ে রাখা যাবে না। দেশের জনগণ এদেরকে প্রতিরোধ করতে মাঠে নেমে পড়েছে। তিনি অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থার দাবি জানান।
খুলনা বিভাগীয় গণঅবস্থান মঞ্চ থেকে তিনি জানান, বিদ্যু, তেল, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির সীমাহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আগামী ১৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। সেই কর্মসূচি থেকে সরকার পতনের পরবর্তী বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
গণঅবস্থান কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মেহেদী আহমেদ রুমি বলেন, জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার এখন কাগজের বাঘ। দেশ এখন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এমপি মন্ত্রীরা পুলিশ ছাড়া চলাচল করতে পারছে না। কোনো বাহিনীর সদস্য ছাড়া মাঠে নামলে বাংলার জনগণের রোষানলে তারা পালাবার পথ খুঁজে পাবে না।
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা ঘরে ফিরবে না। ক্ষমতা দখলের জন্য নয়, দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পির পরিচালনায় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামিম, সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাশ অপু, যশোর জেলার আহ্বায়ক অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম, সাবেক সংসদ সদস্য মফিদুল ইসলাম তৃপ্তি, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম, সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাবিরা নাজনীন, কেন্দ্রীয় সদস্য আয়শা সিদ্দিকা মানি, মেহেরপুর জেলা সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন, সাবেক সংসদ্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি এম এ মজিদ, নড়াইল বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, বাগেরহাট জেলা আহ্বায়ক ইঞ্জি. আকরাম হোসেন তালিম, সাতক্ষীরা জেলা আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী, মাগুরা জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহসান হাবীব কিশোর, ঝিনাইদ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাবিরুল ইসলাম সাবু, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজ্জাফর আহমেদ আলম, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরিফুজ্জামান শরিফ, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, জাহিদুজ্জামান মনা, মোজাফ্ফর আলম প্রমুখ।
এর আগে সকাল থেকে খুলনা মহানগর, জেলা ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কেডি ঘোষ রোডে জড়ো হতে শুরু করেন। গণঅবস্থান কর্মসূচিতে মহানগর ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত জাসাস নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী গণসঙ্গিত পরিবেশন করেন। সমাবেশ থেকে কারাবন্দি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়।
মোহাম্মদ মিলন/এমএএস