খালেদা জিয়ার উপদেষ্টাকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ!
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. গোলাম জাকারিয়া। জেলা বিএনপির একাংশ আয়োজিত বিএনপির আন্দোলন নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে প্রধান অতিথি হিসেবে আসতে না দিয়ে আরেকটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ায় তিনি এই অভিযোগ করেন।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টাউন ক্লাব মিলনায়তনে এক সভায় আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে আসতে না দেওয়ায় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) সৈয়দ শাহীন শওকতকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির একাংশ।
জানা যায়, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে প্রধান অতিথি করে জেলা বিএনপির আয়োজনে দুইটি পক্ষ একই ব্যানারে দুইটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় বিএনপির ১০ দফা দাবি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রনীত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত রূপরেখা বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় একই সময়ে। দুটি অনুষ্ঠানেরই প্রধান অতিথি করলেও আবুল খায়ের ভূঁইয়া যোগ দেন একটি অনুষ্ঠানে।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রবেশদ্বার দ্বারিয়াপুরে নেতাকে গ্রহণ করতে অবস্থান নেয় জেলা বিএনপির দুইটি গ্রুপ। তবে সড়কপথে আবুল খায়ের ভূঁইয়ার গাড়ি আসলেও তার গাড়ি ফাঁকা ছিল। রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক বাদ দিয়ে ভিন্ন পথে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা শহরের সোনার মোড়স্থ জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সভায়। সেখানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
এদিকে, টাউন ক্লাব মিলনায়তনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়ার নেতৃত্বে থাকা বিএনপির একাংশের অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়েই ফিরে যান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আবুল খায়ের ভূঁইয়া।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া বলেন, মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে থেকেই প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়ার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এমনকি আজকে সকালেও তিনি এখানে যোগ দেবেন বলে আমাদেরকে নিশ্চিত করেছিলেন। কিন্তু বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) সৈয়দ শাহীন শওকত তাকে ভুল বুঝিয়ে আরেকটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। প্রধান অতিথিকে প্রভাবিত করে আমাদের অনুষ্ঠানে আসতে দেওয়া হয়নি। অনেক নেতাকর্মীই আজকে উপস্থিত হয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় নেতার দিকনির্দেশনা ও বক্তব্য শুনতে। কিন্তু আমরা আশাহত হয়েছি তার অনুপস্থিতিতে। এ ঘটনার জন্য জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকতকেই দায়ী করে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে। এছাড়াও এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট অভিযোগ দেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির ব্যানারে দুইটি সভা আয়োজন ও একটিতে যোগদানের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, আমি এই জেলার রাস্তাঘাট তেমনভাবে চিনি না। নেতাকর্মীরা আমাকে যেভাবে নিয়ে এসেছে, আমি সেভাবেই একটি সভায় যোগদান করেছি। জেলা বিএনপির ব্যানারে একই প্রোগ্রাম দুই জায়গায় হতে পারে না। একটি পক্ষকে ত্যাগ শিকার করতে হতো। আমি গোলাম জাকারিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবো। তবে বিএনপিতে কোনো দলীয় কোন্দল নেই বলে জানান তিনি।
তবে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে প্রভাবিত করে একটি আয়োজনে নিয়ে আসার অভিযোগ অস্বীকার করেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। তিনি বলেন, এটি তেমন বড় কোনো বিষয় নয়। বিএনপির মধ্যে কোনো বিভেদ নেই এবং আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। জেলা বিএনপির সভা একটি জায়গাতেই হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মো. জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস