ভোলায় মহাসড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে সব শ্রেণির মানুষ
![ভোলায় মহাসড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে সব শ্রেণির মানুষ](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2023January/bhola-20230106205551.jpg)
ভোলার পরাণগঞ্জ থেকে চরফ্যাশনের বাবুরহাট পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় ভোগান্তির কবলে পড়েছে এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।
বিজ্ঞাপন
সড়কটির কাজ দীর্ঘ দেড় বছর ধরে নির্মাণাধীন থাকায় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এ কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। ধুলা-বালুর কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে সড়কের দু'পাশে বসবাসকারী মানুষ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায় এলাকাবাসী। কিন্তু নিরব সড়ক বিভাগ।
জেলা সদর থেকে ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় যাতায়াতের প্রধান সড়ক হচ্ছে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়ক।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া পর্যটন কেন্দ্র কুকরি-মুকরি, তারুয়া সমুদ্র সৈকত ও জ্যাকব টাওয়ারে ভ্রমণসহ এই রুটে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সড়কটি সরু হওয়ায় নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছিলেন এই সড়ক ব্যবহারকারীরা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সড়ক বিভাগ সড়কটিকে ১৮ ফুট থেকে ৩০ ফুট প্রশস্ত করার জন্য ২০২০ সালে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। বরাদ্দ হয় ৮৩৪ কোটি টাকা।
জেলার উত্তরের পরাণগঞ্জ থেকে দক্ষিণ প্রান্তের বাবুরহাটের ৯৪ কিলোমিটার সড়ক এবং ৪টি পিসি গার্ডার ব্রিজ ও ৪০টি কালভার্ট নির্মাণের জন্য সময় নির্ধারণ হয় ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ রুট ব্যবহারকারী এবং সড়কের দু'পাশের বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কাজ চলমান থাকায় ধুলো-বালিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জীবন-জীবিকা, অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসী মো. জসিম উদ্দিন সিকদার বলেন, এই রাস্তাটি দুই বছর পর্যন্ত এ রকম ক্ষত অবস্থায় আছে। এতে করে আমরা এলাকাবাসীরা অনেক ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি। ধুলো-বালির কারণে আমরা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারি না। এতে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ছাত্র-ছাত্রী, মহিলা ও শিশুসহ আমাদের সকলেরই অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
শরিফুল ইসলাম বলেন, রাস্তা ভাঙা হওয়ার কারণে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা হয়। এ রাস্তা কারণে আমরা দীর্ঘদিন পর্যন্ত কষ্টে আছি। তাই সরকারের কাছে দাবি, রাস্তার সমস্যাটা যেন খুব দ্রুত সমাধান করে।
যানবাহনের মালিক এবং শ্রমিকদের দাবি, নির্মাণাধীন সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে নির্ধারিত সময়ে তারা যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রপাতি। কমে যাচ্ছে যাত্রীর সংখ্যা। নেহাত বাধ্য না হলে কেউ এই রুটে চলাচল করে না। এতে লোকসানের মুখে পড়ছেন যানবাহন মালিকরা।
মাইক্রোচালক হান্নান বলেন, আমাদের ভোলা থেকে চরফ্যাশন যেতে আগে দুই ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন চার ঘণ্টা সময় লাগে। রাস্তা খারাপ হওয়াতে আমাদের তেল বেশি লাগে, সময় বেশি লাগে এমনকি গাড়িরও সমস্যা হয়। বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যায় আমরা আর কতদিন থাকবো? আমরা এখন এই সমস্যা থেকে মুক্তি চাই।
ভোলার যানবাহনের মালিক মো. মনির হাওলাদার বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়াতে আমাদের গাড়িতে এখন যাত্রী অনেক কমে গেছে। রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে সঠিক সময় যেতে পারে না। এতে রোগী ও স্বজনদের অনেক ভোগান্তি হয়। এছাড়া ট্রাকে করে মালামাল সঠিক সময়ে পৌঁছাতে না পাড়ায় অনেক সমস্যা হয়। সবমিলিয়ে রাস্তা খারাপ হওয়াতে আমাদের যানবাহনের ব্যবসায়ীদের অনেক লোকসান হয়। তাই রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
সড়ক বিভাগের ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো: নাজমুল ইসলাম জনিয়েছেন, গত বছর অতিমাত্রায় বৃষ্টিসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। বিষয়টি সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন পক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ভোলা সড়ক বিভাগ ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।
এমএএস