ভুয়া এনজিও খুলে কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হাবিবুর আটক
বনলতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে একটি এনজিও খুলে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় হাবিবুর রহমান (৩৫) নামের এক প্রতারককে আটক করেছে র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্প। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৬ সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার মেজর গালিব।
এর আগে সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। প্রতারক হাবিবুর রহমান (৩৫) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বাকড়া গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে।
র্যাব-৬ সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার মেজর গালিব জানান, প্রতারক চক্রের মূলহোতা হাবিবুর রহমান তার কতিপয় সহযোগী নিয়ে ২০১৯ সালে 'বনলতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড' নামে একটি ভুয়া এনজিও খোলে। হাবিবুর অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। বেশ কিছুদিন এনজিও পরিচালনা করার পর সে তার অফিস বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায়। পরবর্তীতে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী র্যাব-৬ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল জানতে পারে সদর থানা এলাকায় আসামি আত্মগোপন করে আছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে শহরের পলাশপোল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে সাধন চন্দ্র সরকার বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
মামলার লিখিত বিবরণীতে জানা যায়, ২০২০ সালে সদর উপজেলার ব্যাংদহা বাজারে সিটি ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখা চালু করেন হাবিবুর রহমান। নিজেকে সিটি ব্যাংক ব্যাংদহা শাখার চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে ৩০ জন কর্মী নিয়োগ দেন। প্রত্যেকের নিকট থেকে জামানত গ্রহণ করেন এক থেকে তিন লাখ টাকা। এরপর বনলতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে আরেকটি অফিস চালু করেন। অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে নিয়োগকৃত কর্মীদের দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শত শত মানুষ বিভিন্ন অংকের টাকা সেখানে জমা রাখেন। যারা কেউই পরবর্তীতে টাকা ফেরত পাননি। এরপর হঠাৎ এজেন্ট শাখার কার্যালয় ও সমিতির অফিস বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যান হাবিবুর।
মামলার বাদী সাধন চন্দ্র সরকার বলেন, আমার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নিয়েছে। এ টাকায় মাসিক ২৮ হাজার টাকা লাভ প্রদান করবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাকে এক টাকাও দেয়নি। তাকে খুঁজেও পাওয়া যায় না। মোবাইল ফোন নম্বরও বদলে ফেলেছে। শত শত মানুষের কাছ থেকে এভাবে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে সে। যারা অধিকাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। আমি থানায় মামলা দিয়েছি হাবিরুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
সাতক্ষীরা সদর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি প্রতারণার মামলা নিয়েছি। ইতোমধ্যে হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা থানায় এসে ভিড় জমাচ্ছে। তার বিষয়ে বাদবাকি তদন্ত করে অন্য ভুক্তভুগীদের বিষয়টি মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
সোহাগ হোসেন/আরকে