ফরিদপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ আহত ১০, বাড়িঘর ভাঙচুর
ফরিদপুরের নগরকান্দায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় তিনটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোমবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের বনগ্রাম ও গোয়ালদী গ্রামের মাঝে মাঠের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বনগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম খানের সঙ্গে প্রতিপক্ষ আসাদ মোল্লার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। প্রায় এক মাস আগে ইউপি সদস্য রবিউলের বাড়ি থেকে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রবিউলকে আসামি করে নগরকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলার পর রবিউল পলাতক ছিলেন। গত রোববার জামিন নিয়ে এলাকায় ফেরেন তিনি।
এলাকাবাসী জানায়, রবিউল এলাকায় এসে প্রতিপক্ষ এক ব্যক্তির মেসেঞ্জারে মেসেজ দিয়ে তার রগ কাটার হুমকি দেন। এ ঘটনার জেরে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রোববার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রবিউল পুরপাড়া বাজারে একটি ওষুধের দোকানে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ঘেরাও করে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান রবিউলকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এরই জের ধরে সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে রবিউল ইসলাম খাঁনের সমর্থকদের সঙ্গে আসাদ মোল্লার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়। তাদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সংঘর্ষের সময় ইউপি সদস্য রবিউল, মানিক মোল্লার বাড়িসহ অন্তত চারটি বাড়িতে হামলা ও কুপিয়ে ঘরের টিন কাটার ঘটনা ঘটে। পরে নগরকান্দা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম খাঁন বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে। আমি জামিনে আসার পর তারা আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেছে।
সংঘর্ষের ব্যাপারে আসাদ মোল্লা বলেন, ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম অস্ত্র মামলায় জেল থেকে জামিনে বের হয়ে এসেই এলাকার লোকদের হুমকি-ধমকি দেওয়া শুরু করে। এরপর সোমবার সকালে কোনো কারণ ছাড়াই রবিউল ও তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। ফলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ফকির বলেন, জামিন নিয়ে এলাকায় আসার পর ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামের উপর প্রতিপক্ষ হামলা করে বলে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রথমে রোববার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পুরাপাড়া বাজারে রবিউলকে ঘেরাও করা হয়। আজ সোমবার সকালে রবিউলের বাড়িতেই হামলার ঘটনা ঘটে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকা শান্ত রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
জহির হোসেন/এসকেডি