দীর্ঘ লাইনেই শেষ হলো ভোটগ্রহণের সময়
রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ব্যবহার হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। কিন্তু ইভিএম নিয়ে অনেক ভোটার অভিযোগ জানিয়েছেন। ভোটাররা বলছেন, ইভিএমে সময় বেশি লাগছে। ফলে অনেকেই ভোট না দিতে পেরে ফিরে গেছেন। তাই আগের ভোট পদ্ধতিই সঠিক ছিল বলে ভোটাররা দাবি করেন।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে। বিকেল সাড়ে ৪টায় সময় শেষ হয়ে গেলেও অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
নির্বাচন অফিস বলছে, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এটি নতুন যন্ত্র। তাই ভোটারদের কাছে হয়তো এটা ভালো লাগেনি। ভোটার ও ভোটগ্রহণকারী সবার জন্য ইভিএম নতুন। ফলে প্রতিটি ভোটগ্রহণে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগছে। অনেকের আঙুলের ছাপ মিলছে না। এ কারণে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। সময়ও বেশি লেগেছে।
বিকেল সাড়ে ৪টায় আশরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শত শত নারীর দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এ সময় ভোটাররা বলেন, ব্যালট পেপারে ভোট প্রক্রিয়াই অনেক ভালো ছিল। যন্ত্র এসে আমাদের সময় নষ্ট করেছে। এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। অনেকেই দিন আনে দিন খায়। সেই মানুষগুলোই যদি সারাদিন ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে তবে তাদের সংসার চলবে কীভাবে। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে এটি দ্রুত সমাধান করার দাবি জানান ভোটাররা।
সমিরুন্নেসা (৬৬) নামে এক ভোটার বলেন, আমি দুপুর ১টার সময় লাইনে দাঁড়িয়েছি। দাঁড়াতে কষ্ট হয়, তাই পুলিশ ভাইয়েরা আমাকে একটি বেঞ্চে বসিয়েছে। জীবনে অনেক ভোট দিয়েছি। কিন্তু এমন ভোট দেখিনি। পরে আবার লাইনে দাঁড়িয়েও ভোট দিতে পারিনি। আমার মতো অনেকেই আঙুলের ছাপ মেলাতে না পেরে ভোট দেয়নি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ পাইনি। ইভিএমে ভোটগ্রহণ এ অঞ্চলে প্রথম। ফলে কিছুটা বিড়ম্বনা হচ্ছে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ইভিএমের কোনো ত্রুটি নেই উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, কিছু ভোটারের হাতের আঙুল পরিষ্কার না থাকায় আঙুলের ছাপ মেলেনি না। হাত পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবার মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন সর্বমোট ২৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৩০নং ওয়ার্ডে একজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এমজেইউ