মিনি ট্রাকে ফুলগাছ বিক্রি করে মাসে আয় লাখ টাকা
দুই ভাই লিটন হাওলাদার ও সুধাংশু কুমার হাওলাদার। চার বছর আগে শুরু করেন নার্সারির ব্যবসা। তবে নার্সারিতে গিয়ে মানুষ ফুলের গাছ না কেনায় ব্যবসায় খুব একটা লাভ হচ্ছিল না। তাইতো ক্রেতার কাছে দ্রুত ফুলগাছ পৌঁছে দিতে ২ লাখ টাকা খরচ করে চার্জার সিস্টেম মোবাইল ট্রাক বানান। আর এতেই বাজিমাত। এখন ফুলগাছ বিক্রি করে মাসে তাদের আয় হচ্ছে লাখ টাকা।
ট্রাকে করে বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছের চারা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান লিটন হাওলাদার। যুগের সাথে ব্যবসায়ের আধুনিকায়নের জন্য গ্রাহকের চাহিদার কথা ভেবে এই মোবাইল ট্রাক বানিয়েছেন বলে জানান। অফিস, প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি সাজানো এবং বাগান ও ছাদ বাগান তৈরিতে হরেক রকমের গাছের চারা কিনতে ক্রেতাদের প্রতিনিয়তই জনপ্রিয়তা বাড়ছে তার মোবাইল ট্রাকে।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাজিতা গ্রামের হাওলাদার বাড়িতেই দুই ভাই মিলে গড়ে তুলেছেন নার্সারি। তাদের নার্সারিতে সব ধরনের ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের চারা রয়েছে। এর মধ্যে গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, সিলভিয়া, ক্যালেন্ডুলা, পাপিয়া, সূর্যমুখী, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, দেশি গাঁদা, রক্ত গাঁদা, হলুদ-লাল মেশানো জাম্বো গাঁদা, বড় ইনকা গাঁদা, ছোট চায়না গাঁদা অন্যতম। এসব গাছের চারা ও কলমের মূল্য সর্বনিম্ন ৪০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। শীতের সময় ফুলগাছের চারার খুব কদর থাকে। এ সময় প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকার চারা বিক্রি হয়।
স্কুল শিক্ষার্থী ইয়ামিন বলেন, আমি স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে মিনি ট্রাক দেখতে পাই। পরে গাঁদা ফুলের গাছ কিনেছি। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
কলেজ শিক্ষার্থী আবিদ খান বলেন, নার্সারিতে গিয়ে এখন আর ওভাবে ফুলগাছ কেনা হয় না, সময়েরও দরকার হয়। ট্রাকে করে নিয়ে আসায় আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। এতে সময় বেঁচে যায় এবং দেখে-শুনে নিজের ইচ্ছেমতো ট্রাক থেকে কেনাও যায়।
ক্রেতা মিনহাজ উদ্দিন বলেন, মোবাইল ট্রাক দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আমরা সময়ের অভাবে নার্সারিতে যেতে পারি না। নার্সারির মালিকদের আমি চিনি। তারা বিভিন্ন জাতের বিশেষ করে শীতের সময়ের ফুলগাছের চারা বিক্রি করেন।
মোবাইল ট্রাকের পরিচালক লিটন হাওলাদার বলেন, আমাদের নিজেদের ফুল, ফল ও লেবুর বাগান রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফুলগাছের চারা রয়েছে আমাদের নার্সারিতে। আগে গাছের চারা বিক্রির ক্ষেত্রে পরিবহনে একটু সমস্যা ছিল। এখন আমরা নিজেরা গাড়ি বানিয়ে নিয়েছি। এই গাড়ি বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা মসজিদের সামনে নিয়ে সেখান থেকে গাছ বিক্রি করি।
নার্সারির মালিক সুধাংশু কুমার হাওলাদার বলেন, চার বছর আগে আমি মির্জাগঞ্জে একটি নার্সারি তৈরি করি। তারপর দেখি নার্সারি থেকে গাছের চারা তেমন বিক্রি হচ্ছে না। এরপর নিজেরা একটি মোবাইল ট্রাক বানাই। এই ট্রাক পটুয়াখালীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এখন আমাদের অনেক গাছের চারা বিক্রি হয়। প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারি। আমাদের নার্সারির ব্যবসার গতি ফিরিয়ে এনেছে এই মোবাইল ট্রাক।
মাহমুদ হাসান রায়হান/এসপি