শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধ
আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এই দিনে ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে বাঙালি জাতি পেয়েছে স্বাধীনতা। জাতির গৌরব আর অহংকারের এই দিনে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করেছে সর্বস্তরের মানুষ।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিউগলে বেজে উঠে করুণ সুর। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করে সশস্ত্র বাহিনী। এরপর জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটক। শ্রদ্ধার ফুল হাতে নামে গণমানুষের ঢল।
শুক্রবার সকাল থেকেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভিড় জমিয়েছেন রাজনৈতিক, সামাজিক, ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীসহ লাখ লাখ মানুষ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সফের আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বিজয়ের স্বাদ ভোগ করছি। কিন্তু আমার শহীদ ভাইয়েরা এর স্বাদ পায়নি। তাদের আজ খুব বেশি মনে পড়ছে। তবে অনেক গর্ব হচ্ছে আমার ভাইদের শ্রদ্ধার ফুল দিয়ে স্মরণ করছে গোটা জাতি। এটাই আমার বিজয়, এটাই আমার স্বাধীনতা।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা গার্মেন্টস কর্মী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমি ঢাকায় নতুন এসে কাজ শুরু করেছি। আজই প্রথম বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে এলাম। আমার উপলব্ধিই ছিল না বিজয় দিবসের। আজ বুঝতে পারলাম বিজয় আসলে আমাদের অহংকার। এখন বাসায় ফিরে আমার সন্তানদেরও নিয়ে আসব, যাতে তাদেরও এই অনুভূতির ছোঁয়া লাগে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সৌরভ বলেন, প্রতিবছর শ্রদ্ধা জানাতে আসি। অন্যান্য বিজয় দিবসের তুলনায় এবার জনসমাগম বেশি। আজ আগেভাগেই শ্রদ্ধার ফুলে সিক্ত হয়েছে শহীদ বেদী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও লোকে লোকারণ্য হবে। আজ আমাদের গৌরবের দিন।
ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসা কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবার মানুষ বিজয়ের আনন্দে ভেসেছে। আমি এসেছি আমার শিশু সন্তানদের নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে ধারণা দিতে তাদের নিয়ে এসেছি। প্রতিবারই আমি শ্রদ্ধা জানাতে আসি। কিন্তু এবার অনেক মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। দেখে মনটা ভরে গেল।
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বরত গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, আমরা শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত করেছি। এবার সকাল থেকেই গণমানুষের ঢল শুরু হয়। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
মাহিদুল মাহিদ/এমজেইউ