রংপুরে কমেছে মাছ-মুরগি-সবজির দাম, স্বস্তিতে ক্রেতারা
রংপুরে শীতের সবজির ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সবজির দাম কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি মাসের শেষের দিকে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সবজির দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মাঝে।
সরেজমিনে রংপুর নগরের মর্ডান বাজার, চকবাজার ও লালবাগ বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা থরে থরে সাজিয়ে রেখেছেন গাজর, টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, লাউ, বেগুন, আলু, পুঁইশাক, পালংশাক, লালশাক, মুলাশাক।
লালবাগ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রচুর সবজি বাজারে আসছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে সবজির দাম অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। কয়েক দিন আগেও লাউ বিক্রি হতো ৪০-৫০ টাকায়, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে। ৭০-৮০ টাকার বেগুন ৩০ টাকা, নতুন আলু ৩০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, ফুলকপি ২০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
লালবাগ বাজারের শাক ব্যবসায়ী মাসুম মিয়া বলেন, শাকের দাম আগের থেকে আঁটি প্রতি ৫-১০ টাকা কমেছে। কলমিশাক, লালশাক, সরষে আগে এক আঁটি বিক্রি হতো ১০ টাকা দরে। এখন দুই আঁটি বিক্রি হয় ১৫ টাকায়। লাউশাক আগে এক আঁটি ১৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হয় ১০ টাকায়।
মাছ ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন, মাছের দাম গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। কার্প জাতীয় মাছ আগে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। পাঙাশ ১৪০ টাকা, রুই ২২০ টাকা, মৃগেল ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগি ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৫০ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে।
এদিকে সবজির দাম কমায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন ক্রেতারা। আফজাল নামে এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম কমতে শুরু করায় আমরা কিছু সবজি হলেও কিনতে পারছি। আগে যে দাম ছিল তাতে বাজার করা যেত না।
রফিক নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আগে বাজারে এসে চাল-ডাল কেনার পর দুই-একটি সবজি নিলেই টাকা শেষ হতো। এখন দাম কমায় কয়েক আইটেমের সবজি কেনা যায়।
সাকিব নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আগে মেসের বাজার করতে এসে বিপদে পড়তে হতো। বাজার খারাপ হলেও কথা শুনতে হতো। আবার দামও চড়া ছিল। তেমন কিছুই কিনতে পারতাম না। এখন দাম কমায় আগের টাকায় ভালো শাক-সবজি কেনা যায়।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রংপুরে সবজির ফলন ভালো হয়েছে। চলতি বছর রংপুরে ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।
শিপন তালুকদার/এসপি