খাদিজা এখন ইউসুব
লালমনিরহাটের উত্তর গোবধা দাখিল মাদরাসার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতি আক্তার খাদিজা (১৪)। ছোটবেলা থেকেই দৈহিক গঠন ও আচরণ ছিল মেয়েদের মতো। হঠাৎ গত এক মাস ধরে তার আচরণ ও দৈহিক গঠনে ছেলেদের মতো পরিবর্তন দেখা দেয়। গত সপ্তাহে তার কণ্ঠ ও দৈহিক গঠন পুরোপুরি পুরুষে রূপান্তর হয় বলে দাবি পরিবারের। পারিবারের লোকজন পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন খাদিজা মেয়ে নয়, ছেলে।
পূর্বের জান্নাতি আক্তার খাদিজার নাম রাখা হয়েছে ইউসুব আলী। সে আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দীঘলটারী মাঝপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামান ও পারভীন আক্তার দম্পতির তৃতীয় সন্তান। সে স্থানীয় উত্তর গোবধা দাখিল মাদরাসার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পরিবার লোকজন ও স্থানীয়রা জানান, জান্নাতি আক্তার খাদিজা মাঝপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামান ও পারভীন আক্তার দম্পতির তৃতীয় সন্তান। তাদের আরও দুই ছেলে, দুই মেয়ে রয়েছে। ছোট থেকে দৈহিক গঠন ও আচরণ ছিল মেয়েদের মতো থাকলেও এখন তার আচরণ ও দৈহিক গঠনে ছেলেদের মতো হয়েছে।
মেয়ে থেকে পুরোপুরি ছেলেতে রূপান্তর হওয়ায় তার নাম জান্নাতি আক্তার খাদিজা থেকে পরিবর্তন করে ইউসুব আলী রেখেছে পরিবার। চুল কেটে ছোট করে নারীদের পোশাক পরিবর্তন করে ছেলেদের পোশাকও পড়ছে সে। তবে লোকলজ্জায় বাড়ির বাহিরে যেতে এবং মাস্ক খুলে ছবি তুলতেও অপরাগতা প্রকাশ করে ইউসুব আলী। গত এক সপ্তাহ ধরে ঘটনাটি নিজেদের মধ্যে গোপন থাকলেও বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) গ্রামবাসীর মাঝে প্রকাশ পায়। ফলে তাকে দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন।
জান্নাতি আক্তার খাদিজার বাবা কামরুজ্জামান বলেন, এক মাস ধরে খাদিজার কণ্ঠ ও দৈহিক গঠনে বেশ পরিবর্তন ঘটতে থাকে। পরবর্তীতে গত সপ্তাহে পুরোপুরি পুরুষে রূপান্তর হওয়ায় পারিবারিকভাবে তাকে পরীক্ষা করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তাই তার নাম খাদিজা থেকে পরিবর্তন করে ইউসুব আলী রাখা হয়েছে। সে পুরোপুরি পুরুষ এবং সুস্থ্য রয়েছে।
খাদিজার দাদি নুরজাহান বলেন, কিছু দিন আগে একটি মাজারে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে মেয়ে থেকে ছেলে হয়েছে।
কোন মাজারে ও কেন গিয়েছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাড়ি পাশে একটি মাহফিল করা হবে, পরে সেখানে এসব বিষয় বলা হবে। এর আগে কিছু বলা যাবে না। তাই এসব প্রশ্ন না করার অনুরোধ করেন।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নান্নু বলেন, বিষয়টি শুনেছি। পরে ওই বাড়িতে ওয়ার্ড সদস্যকে খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আজমল হক বলেন, হরমোন পার্থক্যের কারণে এমনটি হতে পারে। হঠাৎ কোনো পুরুষের শরীরে নারী হরমোন বৃদ্ধি পেলে পুরুষ থেকে নারীতে এবং নারীর শরীরের পুরুষের হরমোন বৃদ্ধি পেলে পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তর হতে পারে। মূলত পরীক্ষা না করে কিছু বলা যায় না।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরএআর