সিজার শেষ হতেই কাঁচি ধরে ফেলল নবজাতক, নাম রাখা হলো নেইমার
ব্রাজিল ও দক্ষিণ কোরিয়ার খেলা চলাকালে ব্রাজিলের চার গোল দেখে এক প্রসূতি নারীর সিজার করতে যান কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লেলিন খান। এ সময় নবজাতক শিশুটি সিজার শেষ হতেই সিজারে ব্যবহৃত কাঁচি ধরে ফেলে। বিষয়টি সবাইকে আনন্দিত করায় চিকিৎসক নিজেই শিশুটির নাম রাখেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা নেইমারের নামে। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে কলাপাড়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
ক্লিনিক সূত্রে জানা যায়, খেলা শুরুর প্রথমার্ধ্বে ৪ গোল দেওয়ার পর হঠাৎ ডাক্তারের কাছে খবর কাছে আসে প্রসব বেদনায় ক্লিনিকের বেডে কাতরাচ্ছে ফাতেমা বেগম নামে এক প্রসূতি মা। রোগীর অসুস্থতা বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিক নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। করা হয় সিজার। পরে নবজাতকটি মায়ের পেট থেকে বের করার পরই চিকিৎসকের অপরাশনের কাজে ব্যবহৃত একটি যন্ত্র (কাঁচি) ধরে ফেলে। এ সময় ডা. লেলিন উচ্ছ্বসিত হয়ে ওই শিশুর নাম রাখেন নেইমার এবং ছবি তুলে রাখেন। পরে তার ফেসবুক ওয়ালে ছবি শেয়ার করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
নবজাতক নেইমারের ছোট চাচি অন্তরা বেগম জানান, কলাপাড়া পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের নজিবুল্লাহর স্ত্রী ফাতেমা বেগম। রাত ২টার দিকে প্রসব বেদনা ওঠার পরই ফাতেমাকে ক্লিনিকে নিয়ে আসি। পরে তাৎক্ষনিক ডা. লেলিন ফাতেমার সিজার করেন এবং শিশুটির নাম রাখেন নেইমার।
ওই ক্লিনিকের সেবিকা আলো বেগম বলেন, আমরা সবাই মিলে খেলা দেখছিলাম ব্রাজিল ৪ গোল দেওয়ার পর আমরা অনেকটা উচ্ছ্বসিত ছিলাম। কিন্তু এ সময় ওই রোগীকে ক্লিনিকে নিয়ে আসা হলে আমরা খেলার প্রথমার্ধ্ব শেষ হওয়ার আগেই তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাই। সিজার শেষে বাচ্চাটি অবাক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে। সে ডা. লেলিনের সিজারিয়ান কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রটি ধরে ফেলে। এই বিষয়টি আমাদের কাছে খুব ভালো লেগেছে।
ডা. লেলিন খান বলেন, কলাপাড়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সবাই মিলে ব্রাজিল ও দক্ষিণ কোরিয়ার খেলা দেখছিলাম। এমন সময় এক রোগী আসে খুব অসুস্থ অবস্থায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে তার অপারেশন করার প্রয়োজন হলে আমরা খেলা দেখার অর্ধেক সময় পর অপারেশন করতে যাই। অপারেশন শেষে বাচ্চাটিকে যখন বের করে নিয়ে আসি তখন সে আমার অপারেশনের কাঁচি ধরে ফেলে। আমি যখন ছাড়াতে যাই তখন বাচ্চাটি খুব শক্ত করে ধরে রাখলে বিষয়টি আমার নজরে আসে তখন আমি ছবি তুলি ও উপস্থিত সবাই খুব আনন্দ প্রকাশ করি এবং ছেলেটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাম রাখি নেইমার। ক্লিনিকে অবস্থানরত সবাই ছেলেটিকে দেখতে আসে একদিকে ব্রাজিলের ৪ গোল আবার ছেলেটির নাম রাখা হয়েছে নেইমার। বিষয়টি সবাইকে খুব আনন্দিত করেছে।
মাহমুদ হাসান রায়হান/আরএআর