ভালো নেই পিরোজপুরের বরফ মিল মালিক-শ্রমিকরা
ক্রেতা সংকট, বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ নানা সমস্যার কারণে অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন পিরোজপুরের বরফ মিলের মালিক-শ্রমিকরা। ইতোমধ্যে অনেকেই পেশা পরিবর্তনের চিন্তা করছেন। বরফ মিলের মালিক-শ্রমিকরা বলছেন সরকারি সহযোগিতা না পেলে মিল বন্ধ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এদিকে বরফ মিল বন্ধ হলে হুমকির মুখে পড়বে হাজার হাজার জেলের জীবন।
জানা যায়, পিরোজপুর সদর উপজেলার রমনা আইসপ্লান্ট, চৈতি দ্বীপ্তি এন্টারপ্রাইজ, মল্লিক আইসপ্লান্ট ও ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নে রয়েছে বি. কে আইস অ্যান্ড সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজসহ আরও কয়েকটি বরফ মিল। যাতে প্রায় ৫০-৬০ জন শ্রমিক কাজ করেন। বরফ উৎপাদন ও বিক্রি কম হওয়ায় ঠিকমতো বেতন না পেয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর দিন পার করছেন তারা।
কথা হয় ১৪ বছর ধরে কাজ করা বরফ মিল শ্রমিক মো. সাইদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০১০ সালের দিকে বেচাকেনা ভালোই ছিল। কিন্ত গত কয়েক বছর থেকে পাড়েরহাটেই মাছ কম আসে। ফলে বরফ বিক্রিও অনেক কমে গেছে। আমরা দিন এনে দিন খায়। কিভাবে সামনের দিনগুলো চলবে আল্লাহই জানেন। এখন যে অবস্থা তাতে এই পেশা পরিবর্তন করতেই হবে।
আরেক শ্রমিক লিটন শেখ বলেন, মাছ কম থাকায় সাগরে খুব কম ট্রলার যায়। ট্রলার না চললে বরফ কে কিনবে? ট্রলারও চলে না, বরফ মিলও চলে না। তাই অনেক শ্রমিক চলে যাচ্ছেন। সরকারি নিষেধাজ্ঞায় জেলেরা মাছ ধরতে না পারলে কিছু পায় কিন্তু আমরা বরফ মিল শ্রমিকরা কিছুই পাই না। সরকারিভাবে যদি কিছু করতো তাহলে আমরা একটু ভালো থাকতাম।
বি. কে আইস অ্যান্ড সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ মিল মালিক আলহাজ শাহ আলম খান বাবুল বলেন, বরফ মিলের অবস্থা খুবই খারাপ। যেহেতু মিলের সঙ্গে মাছের সম্পর্ক রয়েছে, তাই এলাকায় মাছ না থাকায় বরফ বিক্রি কমে গেছে। বরফ তৈরির কাঁচামালসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া বিদ্যুৎ সংকটে আমাদের আরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এখন আবার শুনছি বরফ কলের উপর ভ্যাট ধরেছে। এমনিতেই বিভিন্ন সমস্যার কারণে বরফ মিল বন্ধ হবার পালা তার উপর আবার ভ্যাট।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল বারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এখানে সামুদ্রিক ও অভ্যন্তরীণ মাছের অনেক প্রাচুর্যতা রয়েছে। আমাদের পাড়েরহাট মৎস্য বন্দরে বরফের অনেক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু অবরোধে মিলগুলো বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। তাদের সহযোগিতা দরকার। তারা যদি সমস্যার কথা উল্লেখ করে লিখিতভাবে আবেদন করে তাহলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদেরকে সহযোগিতার ব্যবস্থা করবো।
মো. আবীর হাসান/এমজেইউ