টাঙ্গাইলে শীতকালীন সবজিতে লাভের আশা চাষিদের
টাঙ্গাইলে দাম ভালো পাওয়ায় শীতকালীন আগাম সবজি ও চারা বিক্রি করে লাভের আশা করছেন চাষিরা। একই জমিতে চারা তৈরি ও কয়েক প্রকার সবজি চাষ করার পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে অন্য ফসলের তুলনায় অধিক লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। এর ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে সবজি চাষের পরিমাণ। তবে কৃষি বিভাগ থেকে যথাযথ সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছে অনেকে। আর কৃষি বিভাগ বলছে সঠিক পরামর্শ পাওয়ার ফলেই লাভবান হচ্ছে চাষীরা।
সবজির এলাকা খ্যাত টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের লোকেরপাড়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের পাঁচটিকড়ি, বীরসিংহ, বকশিয়া, আতাইলশিমুলসহ প্রায় গ্রামেই চাষ হচ্ছে শীতকালীন সবজি। একই জমিতে ফুলকপি, টমেটো, পাতা কপি, ধনিয়া পাতার পাশাপাশি চারা বিক্রিতেও লাভবান হচ্ছেন তারা। তবে কৃষি অফিসের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ তাদের।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলে ১২ উপজেলায় চলতি মৌসুমে সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। এতে ঘাটাইল উপজেলায় এ বছর ১৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাঠে শীতকালীন আগাম সবজি চাষের ধুম পড়েছে। মাঠে সবজি খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। অনেকেই শীতকালীন সবজির চারা রোপনে ব্যস্ত। গত বছরের তুলনায় এ বছর সবজির দাম বেশি। ভালো দাম পাওয়ায় সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। প্রথম দিকে আবহাওয়া অনূকুলে না থাকলেও বর্তমানে আবহাওয়া কৃষকদের অনূকুলে রয়েছে। এতে বাড়তি দামে সবজি বিক্রি করতে পারায় লাভবান হচ্ছেন এ জেলার কৃষকরা। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে হরেক রকমের সবজি।
পাঁচটিকড়ি গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান ২৮ শতাংশ জমিতে ফুলকপির পাশাপাশি মরিচ ও টমেটোর চারা রোপন করেছেন। ইতোমধ্যে আগাম সবজি ফুলকপি ও টমেটো, মরিচ এবং ফুলকপির চারা বিক্রি করেছেন লাখ টাকার।
মতিয়ার রহমান বলেন, শীত থাকলে সবজি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব। এ বছর সবজির দাম বেশি। ইতোমধ্যে চারা ও সবজি বিক্রি করে ভালো টাকা উপার্জন হয়েছে। খেতে এখন ফুলকপি ফুটেছে। আশা করি ভাল দাম পাব। ২৮ শতাংশ জমিতে সবজি চাষে খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। সাথে নিজেও কাজ করেছি। এখন পর্যন্ত লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে চারা ও সবজি।
আরেক কৃষক রিপন বলেন, সবটুকু জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। সামনে শীত থাকলে দাম ভালো পাওয়া যাবে। পড়াশুনার পাশাপাশি নিজ জমিতে কৃষি কাজ করছি। তবে কৃষক বিভাগ থেকে তেমন সহযোগিতা বা পরামর্শ পাওয়া যায় না। তারা মাঠে আসেন না। আমাদের যেতে বলা হয় অফিসে।
ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন কৃষকদের জন্য। নিয়মিতভাবে কৃষি কাজে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একটি ব্লকে ৫শ কৃষক থাকেন। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কৃষি সেবা দেওয়া সম্ভব না। তারপরও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কৃষি সেবা প্রদানের জন্য উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন বলেন, সবজির বাজারমূল্য ও ফলন ভালো থাকায় ভালো দাম পাচ্ছে কৃষকরা। দিন দিন সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছে তারা। গত বছরের চেয়ে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি অর্জিত হবে।
অভিজিৎ ঘোষ/আরকে