কারামুক্ত হলেন ঝুমন দাস
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগার থেকে মুক্ত হলেন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ঝুমন দাস আপন। গত রোববার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে ছয় মাসের জামিন দেন। ভবিষ্যতে তিনি ফেসবুকে উসকানিমূলক ও ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক কোনো পোস্ট দেবেন না মর্মে মুচলেকা দেওয়ায় তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্ট থেকে জামিনের পর বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হন ঝুমন দাস। এ সময় তার স্ত্রী সুইটি রাণীসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কারামুক্ত হয়ে ঝুমন দাস বলেন, আদালত আমাকে জামিন দিয়েছেন সে জন্য আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। যে কয়টা শর্তে আমি জামিন পেয়েছি সেগুলো মেনে চলব। আমি সেগুলো দেখেই হলফনামায় স্বাক্ষর করেছি। আমি কোনো খারাপ বা বিতর্কিত মন্তব্য করব না।
ঝুমন দাসের স্ত্রী সুইটি রাণী বলেন, আজ উনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো উনাকে বুঝিয়ে রাখতে। আমি চাই আদালত যেন উনাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতের ‘শানে রিসালাত’ সমাবেশে তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবু নগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক আসার পরের দিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে ‘উসকানিমূলক’ স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস।
এ ঘটনা নিয়ে উত্তেজিত হয়ে হেফাজত ইসলামের স্থানীয় সমর্থকরা ১৭ মার্চ হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁওয়ে শতাধিক বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। যা সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় প্রায় ৭ মাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্ত হন ঝুমন।
জামিনে মুক্তির শেষ সময়ে এসে ফের গত ২৮ আগস্ট ফেসবুকে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার অপরাধে ৩০ আগস্ট দুপুরে শাল্লা থানা পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে পোস্ট দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলে রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। প্রায় দুই মাস কারাভোগের পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ঝুমন।
সোহানুর রহমান সোহান/আরএআর