বয়স্ক ভাতার টাকা দেন না মেয়ে, বাবার রাত কাটে ভাঙা ঘরে
নাম আবুল কাদের মুন্সী। বয়স ১০৪ বছর। ১৫ বছর আগে স্ত্রী জামেলা বেগম মারা গেছেন। দুই মেয়ে স্বামী নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ছেলেও বাবাকে দেখেন না। জীবনের শেষ বয়সে এসে তাকে অন্যের ভাঙা ঘরে রাত কাটাতে হচ্ছে।
আবুল কাদের মুন্সী শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রাণীশিমুল ইউনিয়নের উত্তর হালুয়াহাটি ৬ নং ওয়ার্ডের মৃত করিমুল্লার ছেলে। তিনি পেশায় ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার ছিলেন।
স্থানীয়রা বলেন, আবুল কাদের মুন্সীর এক ছেলে। তিনি ঝিনাইগাতী উপজেলার দুধনইয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তার সংসারে অভাব নিত্যসঙ্গী। ফলে বাবার খোঁজ-খবর নেন না। দুই মেয়ে ঢাকায় স্বামীর সঙ্গে গার্মেন্টসে কাজ করেন।
এদিকে আবুল কাদের মুন্সীর এমন দুরাবস্থা দেখে এলাকার কিছু যুবক টাকা তুলে অন্যের জমিতে একটা ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। সেই ঘরও ভেঙে গেছে।
এদিকে আবুল কাদের মুন্সীর বয়স্ক ভাতার কার্ড থাকলেও নিজের ফোন না থাকায় ভাতার টাকা ছোট মেয়ে মিনারা বেগমের বিকাশ নম্বরে আসে। কিন্তু মেয়ে গত পাঁচ বছর ধরে সেই টাকা বাবাকে দেন না। এমনকি বাবার কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না।
সফিকুল ইসলাম নামে এক এলাকাবাসী বলেন, অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে আবুল কাদের মুন্সীর জীবন চলছে। অথচ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কেউ তার খোঁজ নেয় না।
মেয়ে মিনারা বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেশী রাসেল মিয়া বলেন, বৃদ্ধের অবস্থা খুবই খারাপ। তার খোঁজ-খবর কেউ নেয় না। তার মেয়ে বয়স্ক ভাতার টাকা তাকে দেয় না।
আরেক প্রতিবেশী নাজমুল হোসেন বলেন, লোকটার অবস্থা খুবই খারাপ। তার তিন ছেলে-মেয়ে থাকার পরও কেউ নেই তার পাশে।
রাণীশিমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সােহাগ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বিষয়টি জানতাম না। আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি নিজে না পারলে এলাকার বিত্তবানদের মাধ্যমে তাকে যথেষ্ট সাহায্য করার চেষ্টা করব।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুছ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাকে বিষয়টি কেউ জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।
এসপি