‘গরিবের সুপারশপে’ পেলো ১০ টাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য
পাহাড়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মানবিক ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি পালন করে আসছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পাহাড়ের প্রান্তিক মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা বিতরণ করেছে গুইমারা রিজিয়ন এবং বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে গুইমারা সরকারি কলেজ মাঠে গুইমারা রিজিয়ন ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘গরিবের সুপারশপে’ ১০ টাকায় প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সুযোগ পেয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। শুধু তাই নয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কুটির শিল্প সমাহার নিয়ে বসেছে ‘সম্প্রীতি বিপনী’ এবং স্বাস্থ্য পরামর্শ ও ওষুধ নিয়ে বসেছে ফ্রি ‘মেডিকেল ক্যাম্প’।
পাহাড়ে প্রান্তিক মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামাল মামুনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির সদস্য মো. জামাল উদ্দিন।
ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, সেনাবাহিনী পাহাড়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, চিকিৎসা ও দুর্গম জনপদে সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। সেনাবাহিনী শুধুমাত্র দেশের সার্বভৌম রক্ষার কাজে নিজেদের নিয়োজিত না রেখে মানবিক কাজে নিজেদের যুক্ত করেছেন। পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত ও পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে যে প্রাচীর ছিল তা ভেঙে দিতে ভূমিকা রেখেছে সেনাবাহিনী। তিনি পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
এক দিনের এই আয়োজনে এক টাকায় এক কেজি চাল, চার টাকায় মুরগি, দুই টাকায় ডাল, এক টাকায় ১০টি ডিম এভাবে মাত্র দশ টাকায় ব্যাগভর্তি বাজার করার সুযোগ পেয়েছে তিন শ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর লোকজন। একইভাবে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরামর্শ ও ওষুধ পেয়েছে তিন শ জন। অন্যদিকে ‘সম্প্রীতি বিপনী’থেকে পোশাক ও জুতা ক্রয়ের সুযোগ পেয়েছে ৫০ জন।
গরিবের সুপারশপের ক্রেতা পারভীন বেগম বলেন, বেশি দামের কারণে বাজার থেকে জিনিসপত্র কেনা প্রায় অসম্ভব। সবকিছু কিনতে পারি না। এখান থেকে অল্প দামে অনেক কিছুই কিনেছি।
রিপ্রুচাই মারমা বলেন, সুপারশপে আমরা কেনাকাটা করেছি। ভালো লেগেছে, কম দামে পেয়েছি। দশ টাকায় মুরগি-জুতাসহ ব্যাগভর্তি পণ্য কিনতে পেরে খুশি। এতো কম দামে বাজারে পাওয়া যায় না।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির সদস্য মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা পাহাড়ে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে নানা কার্যক্রম করে থাকি। তারই অংশ হিসেবে গুইমারা রিজিয়নের আওতাধীন ৬৫০ পরিবারের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হলো।
পাহাড়ে সেনাবাহিনীর মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে জানিয়ে গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামাল মামুন বলেন, সেনাবাহিনী সবসময়ই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে ছিল। ভবিষ্যতেও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের কর্মতৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
মো. জাফর সবুজ/এমজেইউ