আ. লীগ নেতাকে জুতাপেটা করলেন উপজেলা চেয়ারম্যান
রাঙামাটির লংগদু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। লংগদু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার মাইনীমুখ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল হোসেনকে জুতা দিয়ে পেটান।
আব্দুল বারেক সরকার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকাকালীন গঠিত ইউনিয়ন কমিটিতে হাজাছড়ার কর্মী নুরুল ইসলামকে না রাখার বিষয়কে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
বেল্লাল হোসেন জানান, ‘হাজাছড়ার কর্মী নুরুল ইসলাম আমাকে জিজ্ঞেস করে তাকে কেন কমিটিকে রাখা হয়নি। তখন আমি তাকে জানিয়েছিলাম তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে নিষেধ করেছিলেন বলে আপনাকে কমিটিতে রাখা হয়নি। এই কথাটি নুরুল চেয়ারম্যানকে জানালে সোমবার সকালে তিনি আমার কোনো কথা না শুনেই আমাকে ঘুষি মারে। পরে তার পায়ের জুতা দিয়ে আমাকে মারতে থাকে। আশেপাশের লোকজন আমাকে চেয়ারম্যানের হাত থেকে রক্ষা করেছে।’
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার বলেন, আমি কৃষি ব্যাংক থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে ফেরার পথে বেল্লাল, হুসেন মেম্বারসহ আরও কয়েকজন আমার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তখন তাদের সাথে আমার হাতাহাতি হয়।
আপনার কাছে টাকা পাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার কাছে টাকা পাবে না। তবে দলীয় পদ থেকে আমাকে অব্যাহতি দেয়ার পর থেকে তারা আমাকে নানাভাবে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। এই ঘটনা সেটারই অংশ। এই বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করব।’
এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বেলা ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে দলটি। উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় হতে মিছিলটি বের করা হয়। মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সুভাস চন্দ্র দাশ, সহ-সভাপতি ও সাবেক মাইনীমুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হোসেন আলী, জেলা পরিষদ সদস্য আসমা আক্তারসহ উপজেলা ইউনিয়নের বিভিন্নস্তরের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তরা বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান তার লাঠিয়াল বাহিনীর মাধ্যমে উপজেলায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন করে যাচ্ছে। লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে কেউ তার প্রতিবাদ করতে চায় না। বেল্লালের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। এই ঘটনায় লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া এবং তাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে ৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আব্দুল বারেক সরকার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকাকালীন দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
মিশু মল্লিক/আরকে