সেই ‘বড় ভাইকে’ খুঁজছে পুলিশ
লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়দানকারী আরমান হোসেন নামে সেই ‘বড় ভাই’সহ তার অনুসারীদের খুঁজতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে আরমান দলবদ্ধ হয়ে কারণে-অকারণে মানুষের ওপর হামলাসহ এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ শরিফ উদ্দিন ও মো. মোহন নামে দুই সহোদরকে কুপিয়েছে আরমান ও তার অনুসারীরা।
এদিকে এসব অভিযোগে রোববার (৬ নভেম্বর) বিকেলে পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফ নিজেই আরমানকে আটক করতে তার বাড়িতে যান। এসময় এসপির সঙ্গে সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। পরে সন্দেহভাজন হাসান নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তবে আরমান পলাতক থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্ত আরমান সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিলেও তার কোনো পদ-পদবি নেই। তার একটি সক্রিয় বাহিনী রয়েছে বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চরভূতা ও চরমনসা গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আরমান একটি বাহিনী গঠন করে চাঁদাবাজি, হামলা-ভাঙচুর, মাদকদ্রব্য বিক্রি ও সেবনসহ নানান অপকর্ম করে আসছে। কারণে-অকারণে মানুষকে মারধর করেছে। স্কুল-মাদরাসার ছাত্রীদের পথে পথে বিরক্ত করাসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা পুলিশ সুপারকে সরাসরি এসব অভিযোগ করেছেন।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, আরমান নিজেকে এলাকায় বড় ভাই পরিচয় দিয়ে একটি গ্যাং তৈরি করেছে বলে শুনেছি। সে চাচ্ছে এলাকায় একটি অরাজকতা সৃষ্টি করতে। সেটি কখনও হতে দেওয়া হবে না। হাসান নামে ওই দলের একজনকে আটক করা হয়েছে। কিশোর গ্যাং সদস্যদের শক্ত হাতে দমন করা হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ‘বড় ভাই’ না ডাকায় আরমান ও তার অনুসারীরা একটি ছেলেকে মারধর করছিল। এসময় শরীফ নামে একটি ছেলে বাধা দেয়। এতে তারা শরীফকে মারধর করে। ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতা বালু ট্যাক এলাকায় দেখা হলে আরমানের কাছে শরীফের বড় ভাই মোহন মারধরের কারণ জানতে চায়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আরমান ও তার লোকজন মোহনের ওপর হামলা করে। এসময় তারা মোহন ও শরীফকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের (দুই সহোদর) মাথায় আঘাত করে জখম করে হামলাকারীরা। তাদের হাত থেকে বাঁচতে মোহন ও শরিফ ভগ্নিপতি নুর হোসেনের টেলিকম দোকানে ঢোকেন। সেখানেও হামলা চালিয়ে দোকানটি ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে টেবিলের ওপর থাকা বিকাশের ১৭ হাজার ৬০ টাকা লুট করে নেয় তারা। আহত শরীফ ও মোহন একই ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের শাহ আলম খাঁর ছেলে। এ নিয়ে ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে স্থানীয়ভাবে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএএস