সুনামগঞ্জে ৫ জনের যাবজ্জীবন
সুনামগঞ্জে ধর্ষণের পৃথক দুই মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, জেলার বিশম্ভরপুর উপজেলার দীগেন্দ্র বর্মন ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী একটি এনজিওতে চাকরি করতেন। ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট দুপুরে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে আসামি আনোয়ার হোসেন তাকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে বেড়ানোর কথা বলে তাহিরপুর সীমান্তের শাহ্ আরেফিন মোকামের পাশে নিয়ে যায়। পরে মোকামের পাশের আখক্ষেতে নিয়ে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় পাশে থাকা আসামি শয়ফুল্লাহ, সাইদুর রহমান ও শফিকুল তাদেরকে ঘেরাও করে। এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেনকে বেঁধে ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। এছাড়া আসামি সেলিম, আনোয়ারুল আজিম আকাশ, মাফিনুর গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়।
পরে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের হয়। আসামি শফিকুল, শয়ফুল্লাহ ও ছাইদুর রহমান ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। মামলা চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষ আটজন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে আদালত আসামি আনোয়ার হোসেন খোকন, শয়ফুল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিকুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ জরিমানা প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জের ছাতকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনায় আসামি ইকবাল হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অপর আসামি জয়নাল আবেদীনকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন দিয়েছেন একই আদালত।
জানা যায়, ছাতকের মোহনপুর গ্রামে ২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টায় বাড়ি থেকে আসামি ইকবাল হোসেন জয়নাল আবেদীনের সহযোগিতায় অপহরণ করে সিলেট নিয়ে যায় তরুণীকে। সেখানে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে ভুক্তভোগী থানায় মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলায় চারজন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে আদালত আসামিদেরকে এই সাজা প্রদান করেন।
দুটি রায়ের বিষয় নিশ্চিত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি নান্টু রায় বলেন, দুটি রায়েই রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
সোহানুর রহমান সোহান/এমজেইউ