ওয়ার্ডে আগুন, অল্পের জন্য রক্ষা পেল ৪৮ নবজাতক
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের বিশেষায়িত নবজাতক ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার শেখ রাসেল স্ক্যানু বিশেষায়িত নবজাতক সেবা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। তখন ওই ওয়ার্ডে ৪৮ নবজাতক ভর্তি ছিল।
বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার পর চার দিকে ধোঁয়া ছড়াতে থাকলে স্বজনরা ওই ওয়ার্ড থেকে নবজাতকদের নিয়ে দ্রুত বের হয়ে যান। তাই বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় নবজাতকরা।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ওই ওয়ার্ড থেকে নবজাতকদের নিয়ে তাদের স্বজনরা বের হয়ে হাসপাতালের বারান্দাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে আশ্রয় নিয়েছেন।
তারা জানান, হঠাৎ করে ধোঁয়া দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত বের হয়ে যান।
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মমিন উদ্দিন চৌধুরী জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশেষায়িত নবজাতক ওয়ার্ডের প্রবেশমুখে নতুন মিটারে আগুন লাগে। চারদিকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা ভয়ে নবজাতকদের নিয়ে বের হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।
তিনি জানান, ঘটনার সময় ওই ওয়ার্ডে ৪৮ নবজাতক ভর্তি ছিল। তাদের বর্তমানে সার্জারি ওয়ার্ড ও নতুন ভবনের শিশু ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১ নবজাতককে অভিভাবকের ইচ্ছায় সিলেটে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আজ রাতের মধ্যে ওয়ার্ড ফেরত নেওয়ার জন্য কাজ চলছে।
তিনি বলেন, বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছি। আগুনে ক্ষতি না হলেও ধোঁয়ায় নবজাতকদের ক্ষতি হতে পারত। কারণ নবজাতকরা খুবই সেনসিটিভ।
হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক সাকরিয়া হায়দার জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। সন্ধ্যা ৭টায় খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হাসপাতালে যান।
সাকরিয়া হায়দার বলেন, আমরা গিয়ে দেখি আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমাদের কোনো কাজ করতে হয়নি। স্ক্যানু ওয়ার্ডের প্রবেশমুখে আগুন লেগে প্রধান মিটারটি একেবারে পুড়ে গেছে। মিটারটির কানেকশন হয়ত লুজ বা অন্য কোনো কারণেও শর্ট সার্কিট হয়েছে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটতে পারত।
হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার জানান, খবর পেয়ে পিডিবির একটি দল হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। হাসপাতালের নিজস্ব যে ব্রেকারটি আছে সেটি পুড়ে গেছে। এটি গণপূর্ত বিভাগ দেখে।
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ঘটনাটি অবশ্যই বিপজ্জনক। এ ঘটনায় কারো কোনো গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
মো. আজহারুল ইসলাম চৌধুরী/এসকেডি