যশোরের ব্যাংকগুলো খুলছে না এলসি, বিপাকে আমদানিকারকরা
যশোরের ব্যাংকগুলো আমদানি ঋণপত্র বা এলসি খোলা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে জেলার আমদানিকারকরা। ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে আমদানি করা পণ্যের দায় পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। এজন্য নতুন এলসি খোলা বন্ধ করা হয়েছে। তবে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা বলছেন, এলসি খোলা বন্ধ থাকলে চরম সংকটের সম্মুখীন হবেন ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে পণ্যের দামও বাড়বে।
ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের খুলনা জোনের প্রধান আবু সাইদ আবদুল মান্নাফ জানান, বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে দেশে ডলার সংকট চলছে। আমদানি করা পণ্যের দায় পরিশোধ করতে না পারায় নতুন করে এলসি খোলা বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি ভালো হলে আবারও খোলা হবে।
ইস্টার্ন ব্যাংক যশোরের শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল হক জানান, বেশির ভাগ ব্যাংক ডলার সংকটের কারণে এলসি নেওয়া বন্ধ করেছে। এতে আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা পণ্য আনতে না পারলে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তখন ব্যাংকও সংকটের মুখোমুখি হতে পারে। কেননা ব্যবসা করতে না পারলে ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের ঋণের টাকা পরিশোধ করবে না।
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক যশোর শাখার ব্যবস্থাপক আনিছুর রহমান বলেন, ডলার না থাকার কারণে আমরা আমদানির দায় পরিশোধ করতে পারছি না। এজন্য নতুন করে আর এলসি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
যশোরের বৃহৎ মোটরসাইকেল পার্টস আমদানিকারক রিপন অটোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এজাজ উদ্দিন টিপু বলেন, মোটরসাইকেল পার্টস আমদানি করে সারা দেশে সরবরাহ করি। ডলার সংকটের কারণে ব্যাংক যদি এলসি দীর্ঘমেয়াদে বন্ধ রাখে, তাহলে এ খাতের ব্যবসায়ীরা ভেঙে পড়বে।
যশোরের হোন্ডা মোটরসাইকেলের ডিলার মো. আবু শাহরিয়াদ মিতুল বলেন, ডলার সংকটে এলসি বন্ধ থাকায় সংকটে পড়বে আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। এতে করে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। এই অবস্থা দীর্ঘ হলে কর্মসংস্থানেও প্রভাব পড়বে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে।
যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি ও আমদানিকারক মিজানুর রহমান খান বলেন, শিল্পের কাঁচামাল, খাদ্যপণ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে না পারলে বাজার ব্যবস্থা অস্বাভাবিক হয়ে পড়বে। যার প্রভাব পড়বে ক্রেতাদের ওপর। আবার অনেকে কর্মসংস্থানও হারাবে।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে পণ্যের দামে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায়। টালমাটাল হয়ে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। আর বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য, যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যায় বাংলাদেশেরও। তবে সেই তুলনায় রপ্তানি ও প্রবাসী আয় না বেড়ে আরও কমে যায়। ফলে দেশে তৈরি হয় ডলার সংকট।
এ্যান্টনি দাস অপু/এসপি