টাঙ্গাইলে ভোটের আগের রাতে ভোটারদের সঙ্গে রিসোর্টে এমপি
টাঙ্গাইলে রাত পোহালেই জেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে সদস্য পদে নিজের প্রার্থীদের জয়ী করতে রাতে ভোটারদের সঙ্গে রিসোর্টে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের বিরুদ্ধে।
তবে এটাকে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের কোনো কারণ হিসেবে দেখছেন না টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং অফিসার ড. মো. আতাউল গনি।
রোববার (১৬ অক্টোবর) রাত ৯টা থেকে বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য এবং পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলাররা কালিহাতীর এলেঙ্গা রিসোর্টে মিলিত হন।
এ সময় সেখানে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের সবার সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন এবং বাসাইলের নিজ প্রার্থী হোসাইন খান সবুজের অটোরিকশা প্রতীকে এবং সখীপুর উপজেলার জেলা পরিষদ সদস্য পদে কামরুল ইসলামের হাতি প্রতীকে ভোট চান। যা আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে দাবি করেছেন বাসাইল উপজেলার জেলা পরিষদের সদস্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সংগ্রাম।
রিসোর্টটিতে সখীপুর ও বাসাইল উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা, পৌর মেয়র, চেয়ারম্যান, সদস্য, কাউন্সিলর মিলিয়ে দুই শতাধিক লোক সমবেত হয়েছিলেন।
জানা গেছে, এলেঙ্গা রিসোর্টের সবগুলো কটেজ ভাড়া নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক কটেজে ১২ থেকে ১৪ জন করে রাত্রি যাপন করবেন। সকালে যার যার উপজেলায় গিয়ে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে ভোট প্রদান করবেন।
জেলা পরিষদের সদস্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সংগ্রাম বলেন, এমপি জোয়াহেরুল ইসলাম ভোটারদের রিসোর্টে নিয়ে গেছেন নগদ টাকা ও বিভিন্ন প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য। তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। এছাড়া ভোটারদের জোরপূর্বক ভোটগ্রহণের জন্য মোবাইলে ছবি তুলতে বাধ্য করবেন।
এলেঙ্গা রিসোর্টে আসা বাসাইলের কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আল মামুন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম এখানে এসেছিলেন। এছাড়া বাসাইল পৌর মেয়র আব্দুর রহিম আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সম্পাদক, আওয়ামী লীগ নেতা, সকল চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, ইউপি সদস্যদের এক দিনের জন্য আপ্যায়ন করানোর কথা দিয়েছিলাম। আজ রাতে সেটি বাস্তবায়ন করছি। রিসোর্টে ৫টি কটেজ ভাড়া নেওয়া হয়েছে। সেখানে রাতে থেকে সকালে চলে যাবে যে যার মতো।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং অফিসার ড. মো. আতাউল গনি বলেন, এতে আমার কিছু করার নেই। তারা যদি গেট টুগেদার করেন তাহলে এটা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনে মধ্যে পড়ে না। এটা তারা করতে পারেন।
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের বলেন, এলেঙ্গা রিসোর্টে গিয়েছিলাম চা খেতে। খেয়ে চলে এসেছি। তারা পরিবার নিয়ে সেখানে গিয়েছে। ওখানে কোন প্রোগ্রাম ছিল না, কোনো বক্তব্য দিইনি। কোথা থেকে আপনারা এসব খুঁজে পান? মাঝেমধ্যে যাই ওখানে চা খেতে। আমরাতো সব জায়গায় বসে চা খেতে পারি না।
এসকেডি