রান্নার কাজে সহযোগিতা করতে এসে অভিনব কায়দায় চুরি
রংপুরের পীরগাছায় একটি চুরির ঘটনায় টানা কয়েক দিনের অভিযানে অজ্ঞান পার্টির ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ চোরাই মালামাল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুর উপজেলার মহারানী পারভিন (৩৫), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সুরুজ মিয়া (২২), পাপন চন্দ্র মহন্ত (২২), রাশিদুল ইসলাম (৩০), মঞ্জুয়ারা বেগম (৩৫) এবং পীরগাছা উপজেলার হবিবর রহমান (৩৮)।
শুক্রবার (০৭ অক্টোবর) সকালে ছয়জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ। তিনি বলেন, কিছু দিন আগে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়া এলাকার আজগার আলীর বাড়িতে অভিনব কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটে।
এক নারী কৌশলে তাদের বাড়িতে এসে রান্নার কাজে সহযোগিতা করার সময় খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে দেয়। যা খাওয়ার পর রাতে বাড়ির সকলেই অজ্ঞান হয়ে যায়। পরবর্তীতে গভীর রাতে অজ্ঞাত চোরেরা তার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল, নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আজগার আলী গত ৩ অক্টোবর পীরগাছায় থানায় মঞ্জুয়ারা বেগম ও হবিবর রহমানের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চোর দলের অন্যতম সদস্য মঞ্জুয়ারা বেগমকে গাইবান্ধার ধাপেরহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে মঞ্জুয়ারার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুর, রংপুরের পীরগঞ্জ ও পীরগাছা থেকে আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৩টি চোরাই স্বর্ণের আংটি, ২টি স্বর্ণের নাকফুল, ২টি রুপার চেইন, ১টি রুপার ব্রেসলেট, ৬টি রুপার নুপুর, ২টি রুপার পায়ের আংটি, ১ জোড়া রুপার কানের দুল ও নগদ ৭ হাজার ৯৯০ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের আদালতে পাঠানো হলে মঞ্জুয়ারা বেগম ও পারভিন আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ আরও জানান, পীরগাছা থানা ও রংপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার যৌথ দল টানা কয়েক দিন অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ চোর দলের মোট ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এই চক্রটি রংপুর ও আশপাশের এলাকায় কৌশলে খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করতেন। এই চক্রের অন্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি