পাহাড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কফি চাষ
কফি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়। এই জনপ্রিয় কফির চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন পার্বত্য জেলা বান্দরবানের কৃষকরা। পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া কফি চাষের উপযোগী হওয়ায় এখন অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে ঝুঁকছেন কফি চাষে। কফি চাষ করে ইতোমধ্যে সফলতারও মুখ দেখেছেন অনেকেই। অল্প সময়ে লাভ বেশি হওয়ায় পাহাড়ে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাণিজ্যিকভাবে কফির চাষ।
কথা বলে জানা গেছে, কফির চারা রোপণের আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে ফলন দেয়। এ ফলকে বলা হয় চেরি ফল। কফিগাছে ফুল আসে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। ফুল আসার সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ফল আসে গাছে। এ ফল পাকা শুরু হয় আগষ্ট মাস থেকে। এরপরই শুরু হয় ফল সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতের কাজ। বর্তমানে বান্দরবানের পাহাড়ে আবাদ হচ্ছে বিদেশি এরাবিকা ও রোবস্টাজাতের কফি।
কফি চাষিরা জানায়, কফি চাষের জন্য আলাদা কোনো জায়গার প্রয়োজন হয় না। যেকোনো গাছের ছায়া বা কোনো ফলের বাগানের ফাঁকে ফাঁকে কফির চাষ করা যায়। তবে শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি পেলে এবং কফির চারার সঠিক যত্ন নেওয়া গেলে ফলন ভালো হয়। পাশাপাশি চাষিদের পরিশ্রমের কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছরে বান্দরবান জেলায় ৮ মেট্রিক টনেরও বেশি কফি উৎপাদন হয়েছে। বাজারে শুকনো প্রতি কেজি কফি ৩০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আর এতে ভালো লাভবান হন কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের ফারুক পাড়া, লাইমি পাড়া, গেৎশিমনি পাড়াসহ রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার কয়েকটি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে কফির চাষ হচ্ছে। জেলায় কফি চাষির সংখ্যা এখন ৫৮৬ জন। এ বছর ১৪৫ হেক্টর জমিতে কফি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় কফি চাষ বাড়াতে এ বছর কৃষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে চারা ও সার।
বান্দরবান হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশের কয়েকটি জায়গায় কপি প্রসেস হয়। আমরা যদি মানসম্মত কপি প্রসেস করতে পারি কৃষকরা লাভবান হবেন। আমরা এরাবিকা না রোবস্টাও প্রদর্শনী দিয়েছি। এর ফলে কপির আবাদটা বাড়বে। আমি মনে করি, এটা একটা ভালো ড্রিংক এবং স্বাস্থ্যকর। এর আবাদ যত বাড়বে কৃষকরা উপকৃত হবে এবং আমাদের পরনির্ভরশীলতা বা বিদেশি মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
এসপি